১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই ঢাকার চারটি, চট্টগ্রামের দুটি প্রেক্ষাগৃহে প্রথম মুক্তি পেয়েছিল ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমা। এর নির্মাতা ছিলেন আরেক কিংবদন্তী ঋত্বিক ঘটক।
Published : 27 Jul 2023, 04:04 PM
অদ্বৈত মল্লবর্মণ রচিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাস অবলম্বনে একই নামের একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল আজ থেকে ৫০ বছর আগে। প্রথম দিকে সাড়া ফেলতে না পারলেও পরে সেই ফ্লপ সিনেমাটিই বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘কালজয়ী’ হয়ে উঠে।
সিনেমাটির ৫০ বছর পূর্তিতে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিয়েছিলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই ঢাকার চারটি, চট্টগ্রামের দুটি প্রেক্ষাগৃহে প্রথম মুক্তি পেয়েছিল ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমা। এর নির্মাতা ছিলেন আরেক কিংবদন্তী ঋত্বিক ঘটক।
মাত্র ২৮ বছর বয়সে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছিলেন হাবিবুর রহমান খান, পরবর্তীতে যিনি ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘মনের মানুষ’, ‘শঙ্খচিল’ এর মতো সিনেমা প্রযোজনা করে প্রশংসিত হয়েছেন।
৭৮ বছর বয়সী এই প্রযোজক গ্লিটজকে বলেন, “এই সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্পী-কলা-কুশলীদের অনেকেই প্রয়াত হয়েছেন। বিশেষ এইদিনে তাদের কথা বিশেষভাবে মনে পড়ছে। ঋত্বিক ঘটকের কথাও মনে পড়ছে।”
সে সময় ৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা সিনেমাটির বাজেট ছিল জানিয়ে হাবিবুর রহমান খান বলেন, “তখন এত টাকা দিয়ে সিনেমা নির্মিত হত না। এক লাখ, সোয়া লাখ টাকায় সিনেমা হত। এটি তখন বিগ বাজেটের সিনেমা ছিল। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই হল থেকে নেমে যেতে থাকে। সিনেমাটি তেমন চলেনি।”
তবে সেই ফ্লপ সিনেমাটিই পরবর্তীতে প্রযোজক জীবনের সেরা স্বীকৃতি এনে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সিনেমার মাধ্যমেই আমি পেয়েছি আমার প্রযোজক জীবনের সেরা স্বীকৃতি। ৫০ বছরে অসংখ্য মানুষ দেখেছে এই সিনেমাটি। একটা সিনেমা মুক্তির ৫০ বছর পরও যখন কেউ এই সিনেমাটি নিয়ে কথা বলতে আমাকে খোঁজেন, তখনই বুঝি সিনেমাটি সফল সিনেমা হয়েছে।
“বিশ্বের কালজয়ী সিনেমার মধ্যে এই সিনেমাটি অন্যতম, এটাই বড় প্রাপ্তি। এর চেয়ে বড় লাভ আর কি হতে পারে? এখনকার তরুণ প্রজন্মও সিনেমাটি নিয়ে আমার সাথে কথা বলতে চায়, সিনেমা কালজয়ী না হলে তো এটা হত না।”
মুক্তির ৫০ বছর উদযাপনে কোনো আয়োজন করেননি কেন প্রশ্নে হাবিবুর রহমান খান বলেন, “এই সিনেমাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই মারা গেছেন। যারা বেঁচে আছেন, তাদের শারীরিক অবস্থাও ভালো নেই।
“কাদেরকে নিয়ে উদযাপন করব, যে মানুষগুলোর জন্য এই সিনেমাটি হতে পেরেছে, তাদের ছাড়া তো আয়োজনটি পূর্ণতা পাবে না। এখনো যারা বেঁচে আছেন, তাদের শারীরিক অবস্থাও তো ভালো নেই। সব মিলিয়েই করা হয়নি। তবে অন্য কেউ উদ্যোগ নিয়েও তো উদযাপন করতে পারত। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ তো এখন সবার সিনেমা হয়ে গেছে। সবাই উদযাপন করতে পারে। এই যে বিডিনিউজ আমার সাথে কথা বলছে, এটাও তো উদযাপনই বলব আমি।”
‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র, কবরী, ফখরুল হাসান বৈরাগী, গোলাম মুস্তাফা, কাদের মিয়া, রওশন জামিল, সিরাজুল ইসলাম, রোজী আফসারী, রানী সরকার, ঋত্বিক ঘটক, আবুল হায়াত, খলিল প্রমুখ।
সিনিমার সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান। চিত্রগ্রাহক ছিলেন খ্যাতিমান বেবী ইসলাম।