চন্দ্রশেখর কাণ্ড: জ্যাকুলিনের বিরুদ্ধে নোরার মামলা

নোরার অভিযোগ, জ্যাকুলিন ও সংবাদমাধ্যমগুলো ‘পরস্পর যোগসাজশে’ তার বিরুদ্ধে ‘মানহানিকর বক্তব্য’ প্রচার করেছে।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2022, 08:54 AM
Updated : 13 Dec 2022, 08:54 AM

বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন তারকা নৃত্যশিল্পী নোরা ফাতেহী।

এনডিটিভি জানিয়েছে, জ্যাকুলিনের ‘মানহানিকর’ মন্তব্য প্রচারের অভিযোগে ১৫টি সংবাদ মাধ্যমকেও মামলায় বিবাদী করেছেন মরোক্কান বংশোদ্ভূত এই অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী।

নোরার অভিযোগ, জ্যাকুলিন ও সংবাদমাধ্যমগুলো ‘পরস্পর যোগসাজশে’ তার বিরুদ্ধে ‘মানহানিকর বক্তব্য’ প্রচার করেছে।

আগামী ২৯ ডিসেম্বর এ মামলার বিষয়ে শুনানির দিন রেখেছে দিল্লির একটি আদালত।

আইনজীবী বিক্রম চৌহানের মাধ্যমে দায়ের করা মামলার আবেদনে নোরা বলেছেন, তাকে আর্থিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতির মুখে ফেলতে ‘ষড়যন্ত্র করেছেন’ জ্যাকুলিন। আর সংবাদমাধ্যমগুলো তাতে ‘সহযোগিতা’ করেছে।

মামলার আর্জিতে বলা হয়, নোরা ফাতেহী তার ক্যারিয়ারে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীরা সঙ্কটে পড়ে যায়, যারা ন্যায্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘অক্ষম’। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্যর্থ হয়েই তার ‘খ্যাতি নষ্ট করার’ চেষ্টা করছেন তারা, যা তার কাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে।

নোরার অভিযোগ, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ একজন অভিনেত্রী হয়েও তার সহশিল্পীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা বিবৃতি’ দিয়েছেন।

“আমার একই ইন্ডাস্ট্রিতে আছি বলেই আমাকে সে (জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ) অকারণে এসবের মধ্যে টেনে এনেছে এবং আমার মানহানি করছে। সে জানে যে একজন শিল্পীর ক্যারিয়ার, তার কাজ নির্ভর করে তার খ্যাতির ওপর।”

এনডিটিভি লিখেছে, জ্যাকুলিনের বিরুদ্ধে ভারতের আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যে তদন্ত করছেন, তার সঙ্গে নোরার ওই অভিযোগের যোগ রয়েছে।

দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২১৫ কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে সুকেশ চন্দ্রশেখর নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে ভারতের পুলিশ। এরপর চন্দ্রশেখরের অর্থ পাচারের তদন্তে নামে ইডি। ওই তদন্তে চন্দ্রশেখরের অর্থ পাচারে সহযোগিতা করার অভিযোগে ওঠে চিত্রনায়িকা জ্যাকুলিনের বিরুদ্ধে। 

প্রথমে প্রকাশ্যে আসে জ্যকুলিনের সঙ্গে চন্দ্রশেখরে ঘনিষ্ঠতার কথা। তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কয়েকটি ছবিও ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে।এরপর জ্যাকুলিনকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সুকেশের কাছ থেকে অন্তত ৫ কোটি ৭১ লাখ রুপির উপহার পেয়েছেন তিনি, যার উৎস সেই পাচার হওয়া অর্থ।

জেরায় জ্যাকুলিন বলেন, তিনি এক নন, আরও অনেক তারকাই চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে উপহার পেতেন, যার মধ্যে আছেন নোরা ফাতেহি।

আর্থিক প্রতারণার মামলায় নোরার নাম জড়িয়ে পড়ার পর ইডির জেরার মুখোমুখি হতে হয় তাকেও। অভিযোগ ছিল নোরাকে বহুমূল্যের বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন চন্দ্রশেখর।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ও ১৪ অক্টোবরের জিজ্ঞাসাবাদে নোরা বলেন, একটি চ্যারিটি অনুষ্ঠান চলা সময় চন্দ্রশেখরের স্ত্রী লিনা মারিয়া পাল তাকে একটি ‘গুচি’ ব্র্যান্ডের ব্যাগ ও ‘আইফোন’ উপহার দিয়েছিলেন। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরও একজন ছিলেন মারিয়া।

নোরার দাবি, মারিয়া ওই অনুষ্ঠান চলাকালে চন্দ্রশেখরকে ফোন করেন। তখন চন্দ্রশেখর অনুষ্ঠানে আসার জন্য নোরাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন তিনি নোরার একজন ‘ভক্ত’। শুভেচ্ছার স্মারক হিসেবে নোরাকে তিনি একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দিতে চান।

সে সময় ফোনের স্পিকার চালু থাকায় পুরো কথোপকথন লিনাও শুনেছিলেন বলে নোরার ভাষ্য।

গত ২ ডিসেম্বর ইডির কার্যালয়ে নোরার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সেখানেও তিনি চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে কোনো উপহার পাওয়ার কথা ফের অস্বীকার করেন।

এদিকে জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ এর আগে পিএমএল’র (আপিল অথরিটি অব প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট) কাছে একটি আবেদনে বলেছিলেন, তিনি খুবই বিস্মিত হয়েছেন যে, নোরা বা অন্য সেলিব্রেটি, যারা সুকেশের কাছ থেকে ‘উপহার পেয়েছেন’, তাদের এ মামলায় শুধু সাক্ষী করা হয়েছে, অথচ তাকে (জ্যাকুলিন) আসামি করার চেষ্টা হচ্ছে।

অগাস্টের মাঝামাঝি চন্দ্রশেখরের মামলায় দিল্লির আদালতে যে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেয় ইডি, সেখানেই আসে জ্যাকুলিনের নাম। অর্থপাচারের এ মামলায় চন্দ্রশেখর, তার স্ত্রীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Also Read: সুকেশ চন্দ্রশেখরের অর্থ পাচারে ফাঁসলেন জ্যাকুলিন