বিভিন্ন শহরে ৩৫টি শো নিয়ে হবে ‘ম্যাডোনা-দ্য সেলিব্রেশন ট্যুর’।
Published : 19 Jan 2023, 10:56 AM
ম্যাডোনাকে প্রথমবার ‘সুপার হিট’ শব্দটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তার প্রথম অ্যালবামের গান ‘হলিডে’; সেই সাফল্যের ৪০ বছর পূর্তি তিনি উদযাপন করবেন ‘গ্রেটেস্ট হিটস’ ট্যুরে ভক্তদের গান শুনিয়ে।
বিসিসি জানিয়েছে, ৬৪ বছর বয়সী এই পপ-আইকন তার ‘সেলিব্রেশন ট্যুরে’ ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত নিজের নামের প্রথম অ্যালবাম থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের ‘ম্যাডোনা এক্স’ অ্যালবামের সুপারহিট সব গান গাইবার পরিকল্পনা করছেন। বিভিন্ন শহরে ৩৫টি শো নিয়ে হবে ‘ম্যাডোনা-দ্য সেলিব্রেশন ট্যুর’।
সর্বশেষ ম্যাডোনাকে পারফর্ম করতে দেখা গেয়েছিল ২০১৯ সালের ম্যাডাম এক্স-এর শোগুলোতে। কিন্তু হাঁটু ও কোমরের ইনজুরির কারণে সেসময় বেশ কয়েকটি শো বাতিল করতে হয়। থিয়েটারভিত্তিক এক্সপেরিমেন্টাল সেই ট্যুরের শেষ দশটি শো ছিল প্যারিসে, সেগুলো বাতিল হয় কোভিড মহামারীর কারণে।
নতুন ট্যুরেরর ঘোষণা দিয়ে ম্যাডোনা বলেন, “আমি রোমাঞ্চিত, যত বেশি সম্ভব গান গাইতে চাই। ভক্তদের সেই শো উপহার দিতে চাই, যার প্রতীক্ষায় তারা আছেন।”
জুলাই মাসে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে হবে ট্যুরের প্রথম শো। ১ ডিসেম্বর আমস্টারডামে ট্যুর শেষ করার আগে নিউ ইয়র্ক, বার্সেলোনা, প্যারিস ও স্টকহোমে গাইবেন ম্যাডোনা।
এখন পর্যন্ত লন্ডনে একটি শোর তারিখ ঘোষণা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর সেই শো হবে ওটু অ্যারিনায়। তবে আপশাশের তারিখে যুক্তরাজ্যে আরও শো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হবে সেলিব্রেশন ট্যুরের টিকেট বিক্রি। তবে ম্যাডোনা ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা আগাম টিকেট কেনার সুযোগ পাচ্ছেন।
তবে শোর জন্য গান বাছাই করা ম্যাডোনার জন্য কঠিন কাজই হবে। ৬৪ বছর বয়সী এই গায়ক, গীতিকার কম গান তো করেননি।
কেবল যুক্তরাজ্যেই তার ৬৩টি গান বিভিন্ন সময়ে শীর্ষ দশে স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি গান ছিল নম্বর ওয়ান সিঙ্গেল।
কীভাবে এই রেকর্ড গড়া ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল, সেই গল্প ম্যাডোনা শুনিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন টক শো ‘টুনাইট স্টারিং জিমি কিমেল’–এ।
তিনি বলেন, “আমি আমার ক্যাসেট টেপগুলো ক্লাবের ডিজেদের কাছে নিয়ে যেতাম এবং তাদের সেগুলো বারবার বাজাতে উৎসাহিত করতাম।”
রোলিং স্টোনের সমালোচকের মতে, ম্যাডোনার কণ্ঠ ছিল আশির দশকের সবচেয়ে মাদকতাময় স্বরগুলোর একটি। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে ম্যাডোনাকে এমটিভি, বিলবোর্ড এবং মিউজিশিয়ান ম্যাগাজিন ‘দশকের সেরা শিল্পী’ আখ্যা দেয়।
একাধিক সিংগেলসের সাফল্যের পর ৮৩ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম অ্যালবাম ‘ম্যাডোনা। অ্যালবামটি বিলবোর্ড ২০০-এ আট নম্বর জায়গা দখল করে এবং ‘বর্ডারলাইন’ ও ‘লাকিস্টার’ গান দুটি সিংগেলসের সেরা ১০ এ জায়গা করে নেয়।
১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম ‘লাইক আ ভার্জিন’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক তারকায় পরিণত হন ম্যাডোনা। এটা যে কোনো নারী সংগীত শিল্পীর প্রথম অ্যালবাম, যা যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ লাখ এবং বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ১০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়।
তার তৃতীয় অ্যালবাম ‘ট্রু ব্লু’ মুক্তি পায় ১৯৮৬ সালে, যা তিনি তৎকালীন স্বামী শন পেনকে উৎসর্গ করেছিলেন। ওই অ্যালবামের পাঁচটি এককের মধ্যে তিনটিই যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে ছিল এক নম্বর গান।
‘ব্লন্ড অ্যামবিশন ওয়ার্ল্ড ট্যুর’-এর লাইভ রেকর্ড তাকে এনে দেয় গ্র্যামি পুরস্কার।
একই বছর দুটি নতুন গানের সঙ্গে আসে তার প্রথম সেরা কম্পাইলেশন অ্যালবাম ‘ইমাকুলেশন কালেকশন’। এটি কোনো একক শিল্পীর সর্বাধিক বিক্রি হওয়া সংকলন যা বিশ্বব্যাপী তিন কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়।
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য রেকর্ড ভেঙেছেন ম্যাডোনা। তিনি ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের মিউজিক হল অফ ফেমের পাঁচ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের একজন নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে যুক্ত হন ‘রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেম’-এ।
রোলিং স্টোন তাকে সর্বকালের সেরা ১০০ শিল্পীর বিশেষ তালিকায় ৩৬-তম স্থান দেয়। বিলবোর্ড ২০১৬ সালে তাকে বর্ষসেরা নারীর তকমা দেয়।
যৌনতা নিয়ে সবসময়ে খোলামেলা থাকার কারণে বরাবরই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই গায়িকা । তার ‘লাইক আ প্রেয়ার’ এর পারফরমেন্স ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে অভিযোগ ওঠায় এর বিজ্ঞাপন এবং স্পন্সরশিপ বাতিল করা হয়েছিল।
সমাজ পরিবর্তনেও বিশাল ভূমিকা রেখেছেন এ গায়িকা। নারী, শিক্ষা, বৈশ্বিক উন্নয়ন ও মানবিকতায় গুরুত্ব দিয়ে ‘রে অফ লাইট ফাউন্ডেশন’-এর মত দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।