কাদের আসামি করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি।
Published : 25 Oct 2023, 05:50 PM
দেশের বিনোদন জগতের শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত ‘সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগে’ দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে।
খেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান জেনারেশন নেক্সটের প্রধান নির্বাহী মাসুদুর রহমান এ তথ্য জানান। ভিডিও দেখে ওই ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।
তবে মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে, বাদীর নাম এবং রাজধানীর কোন থানায় মামলা হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
শনিবার রাতে এ প্রতিযোগিতার ভেন্যু মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জেনারেশন নেক্সটের প্রধান নির্বাহী মাসুদুর রহমান বলেন, "যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের নামে মামলা করা হয়েছে। সাধারণত মামলা যে প্রক্রিয়ায় চলে, এটাও সেভাবেই চলবে।"
সম্মেলনে উপস্থিত চলচ্চিত্র প্রযোজক আরশাদ আদনান বলেন, “আমরা ক্লোজড সার্টিক ক্যামেরার ভিডিও দেখে ৪/৫ জনকে শনাক্ত করেছি। আমি জি নেক্সটকে অনুরোধ করেছিলাম, অফিশিয়াল পদক্ষেপ নিতে। সে অনুযায়ী অফিশিয়াল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, অচিরেই আমরা সেটার কপি আপনাদের সরবরাহ করব। “
মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেন, "যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের নাম এখন জানানো হবে না বা জানানো উচিত হবে না। তারা যদি নিজেদের শুধরে না নেন, তাহলে হয়ত পরে আমরা নাম বলব। আপাতত আমরা তাদের নাম বলছি না। আমাদের দুই দলের অধিনায়ক এবং আমাদের সিনিয়রদের সাথে আলাপ করেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।"
মামলার ধরন কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, "পাবলিক প্লেসে অকারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে যে ধরনের মামলা হয়, সে ধরনের মামলাই করা হয়েছে।"
যা ঘটেছিল
ভারতে আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরুর আগে বাংলাদেশ দলকে উৎসাহ যোগাতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ঢাকার মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে শুক্রবার রাতের খেলায় মারামারির এ ঘটনা ঘটে।
যাতে আহত হয়ে কয়েকজনকে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে। এ লিগের তৃতীয় ও শেষ দিনের খেলা হওয়ার কথা ছিল শনিবার। পরে খেলা স্থগিত করা হয়।
রাত ১০টার ওই ম্যাচে মোস্তফা কামাল রাজের দলের কাছে অল্প রানে হেরে যায় দীপঙ্কর দীপনের দল। ম্যাচ শেষে রাত সাড়ে ১১টার পর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। দুই পক্ষ থেকেই খেলোয়ারদের নিয়ে কটাক্ষ করে মন্তব্য আসতে থাকলে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন বলে আহত ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
মারামারিতে শিশির সরদার, রাজ রিপা, জয় চৌধুরী, আতিকুর রহমান, শেখ শুভ ও আশিক জাহিদ আহত হন। রাতেই তারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজ ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ এ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, “আমি লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী। আমার দল থেকে যারা জড়িত ছিল, তাদের পক্ষ থেকেও আমি সরি, লজ্জিত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমরা একই পরিবারের সদস্য, তাই ইন্টারনালি সমাধান করেছি।“
নির্মাতা দীপংকর দীপন বলেন, “আমাদের দুই দলে যে প্লেয়ার ছিল, আমরা মারামারিতে জড়াইনি। মাত্র চার-পাঁচ জন এসে আমাদের হামলা করেছে। কিছু মানুষ মারতে এসেছিল, বাকি সবাই ঠেকিয়েছিল।“
এ নির্মাতার ভাষ্য, “যারা হামলা করেছিল তারা দুই দলের খেলোয়াড় নয়। তারা মূলত সাপোর্টার জার্সি পরিহিত ছিল। আমাদের একজন প্লেয়ার মনোজকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। আমার একজন অ্যাসিস্ট্যান্টকে টেনে নিয়ে মাটিতে ফেলে পাড়ানো হয়েছে। আমরা বিস্মিত হয়ে গেছি! এরা কারা? কোত্থেকে এল?
“ঘটনার পরই কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি, এটার সুরাহা না করলে আমরা মাঠ ত্যাগ করব না। তারা আমাদের কাছে এক দিন সময় চেয়েছেন। তাদের ধন্যবাদ যে, এর মধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছেন।“
এদিকে শনিবারের ওই মারামারির পর খেলা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী মাসুদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমতি আসার পর খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এছাড়া সবগুলো দলের অধিনায়ককে নিয়েও আলোচনার মাধ্যমে খেলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
“আমাদের সামনে এখন তিনটি অপশন হতে পারে। কালই খেলা হতে পারে। তবে অনেক খেলোয়াড় এখন খেলার অবস্থায় নেই। এছাড়া ২০/২৫ দিন পর সবার সাথে আলাপ করে আয়োজনটি হতে পারে। অথবা এই আয়োজনটি বাতিলও করা হতে পারে। সেটা আমরা পরে জানাব।“
(প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)