বৈশাখের শুরুতে তাপমাত্রা একটু বেশিই থাকে। তবু থেমে থাকেনা জীবনের কর্মব্যস্ততা। তপ্ত রোদে বা গরমে বেশি সময় থাকলে শরীর খারাপ হতে পারে। ইংরেজীতে যাকে বলে হিটস্ট্রোক। বাংলায় সর্দিগর্মি নামে পরিচিত। এর ফলে অনেকে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। এর থেকে সুস্থ থাকার উপায় নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎক ডাঃ হাবিবুল ইসলাম (এমবিবিএস, এমসিপিএস)।
Published : 17 Apr 2013, 02:38 AM
যে কারণে হিটস্ট্রোক হতে পারে
মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ৪১.১১ ডিগ্রি সেলসিয়াল হলেই হিটস্ট্রোক হয়। রোদে বেশিক্ষণ থাকলে অত্যাধিক ঘাম বা প্রস্রাবের ফলে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। সেখান থেকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের এটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোদে বেশি সময় কাজ করা, হাঁটা-হাঁটি করা, খেলাধূলা বা শারীরিক পরিশ্রমের ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। তাছাড়া অত্যাধিক ঘামের ফলে দেহের পানিশূণ্যতা থেকেও হিটস্ট্রোক হয়।
* রোদে বেশিক্ষণ থাকার ফলে তীব্র মাথাব্যথা, বমিবমি ভাব ও বমি হওয়া।
* শরীর প্রচন্ড ঘামতে পারে আবার ঘামানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
* প্রস্রাবের পরিমান কমে যেতে পারে।
* নিঃশ্বাস দ্রুত হওয়া।
করণীয়:
* দেহের তাপমাত্রা কমাতে ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন।
* আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠান্ডা পরিবেশে নিয়ে আসুন।
* শরীরের পোশাক যথাসম্ভব খুলে দিন।
* ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর বারেবারে মুছে দিন।
* মাথায় ঠান্ডা পানি দিন, রোগী অজ্ঞান না হলে তাকে দ্রুত গোসল করান।
* প্রচুর ঠান্ডা পানি, ফলের সরবত বা স্যালাইন খেতে দিন।
* হিটস্ট্রোকের ফলে কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে যত দ্রুত সম্ভব তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান।
* প্রচন্ড রোদে বাইরে যাওয়ার সময় আঁটসাঁট পোশাকের পরিবর্তে ঢিলেঢালা রুচিসম্মত আরামদায়ক পোশাক পরার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শরীরে সহজে বাতাস ঢুকতে পারে।
* ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে ছাতা ও রোদ চশমা থাকলে তপ্ত রোদের ধকল কিছুটা হলেও কম পোহাতে হবে।
* গরমে চাই পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস। বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরকেরও পর্যাপ্ত পানি পানে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।
* তবে রাস্তায় বা ফুটপাথে খোলা অবস্থায় রাখা বিভিন্ন শরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সেগুলো মোটেই নিরাপদ নয়। এর চেয়ে পানি কিনে খান।
* কেনা পানির চেয়ে ঘরে ফুটানো পানি বেশি নিরাপদ। তাই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে পানির বোতল রাখুন।
* তাছাড়া ঘাম ও প্রস্রাবের ফলে পানি শূন্যতা পূরণে মাঝেমধ্যেই স্যালাইন খান।