ওই পদের আরেক প্রার্থী নিপুণ আক্তারের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান রোববার এ আদেশ দেন।
হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে নিপুণের আবেদনটি ৪ এপ্রিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছেন তিনি।
নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা ও মুজিবুল হক ভুইয়া।
শুনানি শেষে নিপুণের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আপিল বিভাগে সিএমপি ফাইল করেছি যে, যতদিন পর্যন্ত হাই কোর্টের রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়া না যায়, যতদিন পর্যন্ত আমরা পূর্ণাঙ্গ ফাইল না করছি, ততদিন পর্যন্ত হাই কোর্টের আদেশটার কার্যকারিতা যেন না থাকে।
“আমাদের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ হাই কোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।”
জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, “চেম্বার আদালত হাই কোর্টের রায় স্থগিত করেছেন। আগামী ৪ এপ্রিল নিয়মিত বেঞ্চে এটি শুনানির জন্য আসবে।”
জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল এবং নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে নির্বাচনী আপিল বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, তা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে গত বুধবার রায় দেয় বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ। তাতে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ্যতা পায়।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় গত ২৮ জানুয়ারি, পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জায়েদ খান হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩ ভোটে হারিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন প্যানেলের নিপুণকে।
নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন।
তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হলেও তাতে ফল একই থাকলে নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন। সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন।
পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।
জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়ে আপিল বোর্ড তার প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা করে। শপথ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন নিপুণ।
কিন্তু জায়েদ খানের আবেদনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত কেন ‘বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।
পরে হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ।আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি তখন ওই পদে ‘স্থিতাবস্থা’ জারির আদেশ দেন। পরে আপিল বিভাগ তা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
সেই সঙ্গে জায়েদ খানের রিট আবেদনে যে রুল জারি হয়েছিল, হাই কোর্টকে তা নিষ্পত্তি করতে বলে সর্বোচ্চ আদালত। সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে হাই কোর্ট বুধবার নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দেয়, যা রোববার স্থগিত হয়ে গেল।
পুরনো খবর