শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসলেন নিপুণ

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আদালতে লড়াইয়ের মধ্যে ঘোষণা দিয়ে চেয়ারে বসলেন অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার; এর আগে সংবাদ সম্মেলনে ল’ইয়ার সার্টিফিকেট দেখিয়ে আইনি অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2022, 04:02 PM
Updated : 15 Feb 2022, 04:17 PM

মঙ্গলবার বিকালে এফডিসিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ দাবি করেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শুনানি পর্যন্ত তিনিই শিল্পী সমিতির ‘বৈধ সাধারণ সম্পাদক’ হিসেবে থাকছেন।

দাপ্তরিক কার্যক্রমও চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলন শেষে নিজের নেম প্লেট সম্বলিত সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে নিজের প্যানেলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন নিপুণ।

তবে চেয়ারে বসে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি।

কেন তিনি শিল্পী সমিতির ‘বৈধ’ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এখনও দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন তার বাখ্যায় সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ বলেন, “আমাকে নির্বাচনের আপিল বোর্ড বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে। আমি শপথ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেছি। আমার সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসাকে স্টে করেছেন হাই কোর্ট।

“আমি চেম্বার জজের কাছে আপিল করি, চেম্বার জজ আমার উপর হাই কোর্ট যে স্টে করেছিল সেটাকে স্টে করেছেন এবং স্ট্যাটাস কো দিয়েছেন। আমি আমার পূর্বের জায়গায় চলে গিয়েছি, সাধারণ সম্পাদক পদে।”=

সাধারণ সম্পাদক পদে ‘স্থিতাবস্থা’ জারির যে আদেশ আপিল বিভাগ দিয়েছে, তার ব্যাখ্যায় নিপুণ বলেন, “স্ট্যাটাসকো মানে হলো যে যেখানে আছে সে সেখানেই থাকবে। চেম্বার জজ যে স্টে দিয়েছে, সেই আদেশই বহাল রেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুতরাং বৈধ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি রয়ে গিয়েছি।”

আপনি তাহলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নিপুণ বলেন, “হ্যাঁ।’

সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাপ্তরিক কাজেও তার কোনো আইনি বাধা নেই বলেও দাবি করেন নিপুণ; তবে তা ২২ জানুয়ারির শুনানি পর্যন্ত।

“আগামী সোমবার শুনানি পর্যযন্ত আমরা যে যেভাবে আছি, সেভাবেই থাকব। সোমবার আদালত যা নির্দেশ দেবে সেটা আমরা মেনে নেব।”

নিপুণের চেয়ারে বসার ঘটনাকে ‘আদালত অবমাননা’ বলছেন সাধারণ সম্পাদক পদের আরেক দাবিদার জায়েদ খানের আইনজীবী মুজিবুল হক ভূঁইয়া।

মঙ্গলবার রাতে জায়েদ খানকে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসে এ আইনজীবী বলেন, “চেম্বার জজ আদেশটা স্টে করেছেন, রুলটা করেননি। শুনানির সময় চেম্বার কোর্ট বলেছেন, দুইজনকেই স্ট্যাটাস কো মেইনটেইন করতে বলেছেন। কেউ অফিসে যেতে পারবেন।

“তখন প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তখন চেম্বার কোর্ট বলেছিলেন, ফুল কোর্টের শুনানি পর্যন্ত স্ট্যাটাস কো থাকুক। গতকাল ফুল কোর্টের শুনানি হয়েছে। আজকে শুনানি না করে এক সপ্তাহ সময় নিলেন। উনি যে চেয়ারে বসেছেন, আমরা মনে করি, আদালত অবমাননা হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে নিপুণের বক্তব্য নিয়ে তার আইনজীবী আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, তারও একই মত।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তে নিপুণ নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সিদ্ধান্ত হাই কোর্টে জায়েদ খানের মামলায় স্থগিত করা হয়েছিল। আপিল বিভাগের চেম্বার জাজ হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত করেছে।

“সুতরাং স্ট্যাটাস কো যে কথাটা বলা আছে, সেটা কীভাবে করতে হবে? স্ট্যাটাস কো করতে হবে ওই স্থগিতাদেশের নিরিখে। চেম্বার জাজের দুইটা আদেশ আছে। স্টে অ্যান্ড স্ট্যাটাস কো। মানে স্ট্যাটাস কো করতে হবে ওই স্টে’র নিরিখে। তাহলে স্টেটাস কো হলে, যে যে অবস্থায় ছিলেন, সেটাই মেইনটেইন করতে হবে।”

গত ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির ভোটে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।

তবে জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন নিপুণ। তার আবেদনে সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণা করে।

৬ ফেব্রুয়ারি ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণসহ তাদের প্যানেলের বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ নেওয়ার পর জায়েদ খান যান হাই কোর্টে।

হাই কোর্ট আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করলে তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান নিপুণ, তাতে হাই কোর্টের আদেশ স্থগিতের পাশাপাশি স্থিতাবস্থা বজায় রাখার সিদ্ধান্তটি আসে।