সাতই মার্চের কনসার্ট উপলক্ষে নতুন নতুন গান প্রকাশ, বিভিন্ন টেলিভিশন এবং ইয়াং বাংলার ফেইসবুক পেইজে সারাদিনই থাকছে নানা আয়োজন, যার মধ্যে পুরনো কনসার্টগুলোর রেকর্ডও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর ‘জয় বাংলা কনসার্ট’ হয়ে আসছে।
বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্টে একাত্তরের যুদ্ধদিনের অনুপ্রেরণা যোগানো গানগুলো ফিরিয়ে আনা হয় তরুণদের কণ্ঠে। প্রতি বছর কয়েক লাখ তরুণ অনলাইনে ও সরাসরি কনসার্ট উপভোগ করেন।
তবে মহামারীর কারণে এ বছর সরাসরি কনসার্টের আয়োজন যে হচ্ছে না, তা আগেই জানিয়েছিল ইয়াং বাংলা।
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সিআরআইয়ের ট্রাস্ট্রি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক জানিয়েছিলেন, এবার জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন করা না গেলেও আগামী বছর ‘আরো বড় ও সরবভাবে’ এ কনসার্ট হবে।
জয় বাংলা কনসার্টে নিয়মিত অংশ নেওয়া ব্যান্ডদলগুলোকে নিয়ে আলোচনা ও সংগীত পরিবেশিত হবে বিভিন্ন টেলিভিশনে।
জয় বাংলা কনসার্টে নিয়মিত স্টেজ মাতানো দুই ব্যান্ড দল 'শূন্য' এবং 'ক্রিপটিক ফেইট' অনলাইনে গান প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে সিআরআই থেকে।
ক্রিপটিক ফেইট ব্যান্ডের ফেইসবুক পেইজে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের ৫০ বছরে সাতই মার্চ 'চলো বাংলাদেশ' গানটি নিয়ে হাজির হহবেন তারা।
ইয়াং বাংলার ফেইসবুক পেইজে জয় বাংলা কনসার্টের বিশেষ আয়োজন নিয়ে টেলিভিশনগুলোও সাতই মার্চের বিশেষ অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করেছে।
# একাত্তর টিভি: সকাল ১০টা ১০ মিনিট (ক্রিপটিক ফেইট, শূন্য)
# চ্যানেল ২৪: রাত ৮টা ৩০ মিনিট (ওয়ারফেইজ, চিরকুট)
# গান বাংলা: রাত ৮টা (আর্টসেল, ভাইকিংস)
# মাছরাঙ্গা টেলিভিশন: জয় বাংলা কনসার্টে জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পীদের গাওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলো নিয়ে রাত ১১টা থেকে ১ ঘণ্টার অনুষ্ঠান
ফিরে দেখা
২০১৫ সাল থেকে নিয়মিত জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন করে আসছে ইয়াং বাংলা। মূলত মুক্তিযুদ্ধকালের দেশাত্মবোধক গান এবং ওয়েস্টার্ন পপ সংগীতের মিশ্রণে এই কনসার্ট দারুণ জনপ্রিয়তা পায় তরুণ প্রজন্মের কাছে।
২০১৬ সালে দেশের বৃহত্তম এই কনসার্টে বিশেষ আয়োজন ছিল প্রথমবারের মত জাতির পিতার ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের রঙিন ভিডিও প্রদর্শন।
১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, তা দর্শকের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে ২০২০ সালের কনসার্টে। ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ হলোগ্রাফের মাধ্যমে সেই কনসার্টে প্রদর্শন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর এই হলোগ্রাফিক ভাষণ প্রদর্শনের আগে কনসার্টে শেখ হাসিনার আবৃত্তি করা একটি কবিতাও প্রদর্শন করা হয়।
ঢাকা শহরের পাড়া-মহল্লার তরুণ তরুণীদের দল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক তরুণরা দল বেঁধে কেউবা আবার বিচ্ছিন্নভাবে আসেন এ কনসার্টে; তাদের সঙ্গে দূরের অনেক জেলার দর্শকদেরও দেখা যায় কনসার্ট উপভোগ করতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী দুর্জয় দাস বলেন, “জয় বাংলা কনসার্টে উপস্থিত থাকতে পারাও দুর্দান্ত একটি বিষয়। ১৯৭১ সালের যুদ্ধদিনের গানগুলো আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। কনসার্টে যেভাবে সেই গানগুলোকে জীবন্ত করে তোলা হয়, তা আমার অনেক ভালো লাগে।”
বুয়েটের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসিন আহমেদ বলেন, “কনসার্টে ব্যান্ড দলের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরা তরুণরাও যখন গেয়ে উঠি গানগুলো, আমরা তখন আসলে ১৯৭১ সালের সেই যুদ্ধের ময়দানেই ফিরে যাই।”