এ ধরনের নাট্যকার খুব বেশি নেই: সৈয়দ হাসান ইমাম
আমার সঙ্গে ওনার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় যখন ‘লাল সবুজের পালা’ যখন করি। এটার গল্প, কাহিনি, সংলাপ উনি লিখেছিলেন, এটার জন্য উনি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম গেলেও দেখা হতো। পরে যখন শিল্পকলায় এলেন তখন ঘনিষ্ঠতাটা গাঢ় হয়। আমরা দুজনেই সমবয়েসী। নাট্যকার হিসেবে একজন মমতাজউদদীন আহমদের বিশেষ দিক ছিলো ব্যাঙ্গাত্মক লেখনীতে। সিরিয়াস জিনিস ব্যাঙ্গ আকারে লিখতে পারতেন দারুণভাবে। এ ধরণের নাট্যকার আমাদের খুব একটা বেশি নেই। অনেক নাট্যকার আমাদের আছেন, কিন্তু সিরিয়াস বিষয় নিয়ে ব্যাঙ্গ নাটক লেখার লোক নাই বলা চলে। কৌতুক নাটকের মধ্যে সিরিয়াস কথা হুমায়ূন কিছুটা লিখতেন। তবে, সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যাঙ্গনাটক মমতাজউদদীন ভালো লিখতেন।
রসবোধ এবং কৌতুকপ্রিয়তায় তিনি বিশেষ: রামেন্দু মজুমদার
উনিতো খুবই গুণী মানুষ ছিলেন। একদিকে যেমন লেখাপড়ার ক্ষেত্রে-অধ্যাপনা করেছেন, তার পাণ্ডিত্য ছিল বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি নিয়ে। অন্যদিকে, আমাদের একজন শীর্ষস্থানীয় নাট্যকার ছিলেন। বড় অভিনেতা ছিলেন তিনি। আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি তাকে- বিশেষ করে টেলিভিশনে তাকে দেখেছি। নাটকের জন্য তার ভীষণ আবেগপ্রবণ ভালোবাসা ছিলো। তিনি যখন চট্টগ্রাম কলেজে ছিলেন, তখন ছাত্রদেরকে দিয়ে যেভাবে মঞ্চ নাটক করিয়েছেন, তারপর ঢাকাতে এসে আমাদের থিয়েটার নাট্যদলে যোগ দিলেন, সেখানে থেকে নাটক লিখলেন, টেলিভিশনে লিখলেন। মঞ্চনাটক লিখেছেন প্রচুর। তার যে রসবোধ এবং কৌতুকপ্রিয়তা সেটা তাকে বিশেষ করে রেখেছে। ওনার সঙ্গে যখনই থেকেছি তখনই একটা আনন্দময় মুহূর্ত কাটিয়েছি। এতো মজার মজার গল্প করতেন। আজ মৃত্যুদিনেও তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখনও বেঁচে ছিলেন, কিন্তু দেখা হয়নি। আশা করেছিলাম হয়তো আরও কিছুদিন তাকে আমরা পাবো।
উনি আমাদের প্রধান নাট্যকার: মামুনুর রশীদ
আমি খুবই মর্মাহত। উনি আমাদের প্রধান নাট্যকার ছিলেন। উনি সেই ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’ করেছিলেন। এরপর উনি অনেক নাটক লিখেছেন, অনেক জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। তার সঙ্গে আমার অনেক অনেক স্মৃতি আছে। আমরা একসঙ্গে নাটক করেছি টেলিভিশনে, মঞ্চে। অনেক সেমিনার, আলোচনায় আমরা একসঙ্গে বক্তব্য রেখেছি। উনি আমাকে খুবই ভালোবাসতেন- নাট্যকার হিসেবে, অভিনেতা হিসেবে। আমাকে নিয়ে লিখেওছেন। আমি খুবই মর্মাহত।