আটকে গেল ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’

গুলশান হামলার ঘটনাকে উপজীব্য করে নির্মিত মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ পেল না সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2019, 03:03 PM
Updated : 16 Jan 2019, 04:02 PM

স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পারে বলে আশঙ্কা থেকে এটির ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি বলে সেন্সর বোর্ডের ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ জানিয়েছেন।

ফারুকীর চলচ্চিত্রটি দুই বার দেখেছেন চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা।

ইফতেখান বুধবার গ্লিটজকে বলেন, “দ্বিতীয় দফায় সেন্সর বোর্ডের সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ছবিটি দেখার পর তাদের আপত্তিতে চলচ্চিত্রটির সেন্সর ছাড়পত্র প্রদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

“হলি আর্টিজান হামলার মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে- এমন ভাবনা থেকেই চলচ্চিত্রটি ‘ব্যান’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

নওশাদ জানান, সেন্সরবোর্ডের সিদ্ধান্ত নির্মাতা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ফারুকী বরাবরই বলে আসছিলেন, চলচ্চিত্রটি হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনা নিয়ে নয়, ওই ঘটনার ‘অনুপ্রেরণায়’ নির্মিত একটি কাহিনীচিত্র।

চলচ্চিত্রটি সেন্সরবোর্ডে জমা দেওয়ার পর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাননি বলে গ্লিটজকে জানান নির্মাতা ফারুকী। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত শুধু একবার ফোনে একটি সংশোধনী চেয়েছিল সেন্সর বোর্ড।

গত ৯ জানুয়ারি চলচ্চিত্রটি প্রথমবার দেখেছিলেন সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা। তখন চলচ্চিত্রটি ‘ভালো লাগার’ কথা জানিয়েছিলেন সেন্সর বোর্ড সদস্য নাসির উদ্দিন দিলু।

তিনি গ্লিটজকে বলেছিলেন, “আমরা কিছু কারেকশন চেয়েছি। কারেকশান পেলে তারপর ছাড়পত্র দেওয়া হবে।”

তখন ইফতেখারও বলেছিলেন, “তেমন বড় কোনো সংশোধন নয়। আশা করছি ওটা করে দিলেই সেন্সর ছাড়পত্র হাতে পাবেন তারা।”

তবে বুধবার ইফতেখারের কণ্ঠে ছিল ভিন্ন সুর।

তিনি গ্লিটজকে বলেন, “এর আগে ছবিটি আমরা একবার দেখেছিলাম। তখন ছবিটির নির্মাণ নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি ছিলো না। কিছু কারেকশান চেয়েছিলাম। তারা কারেকশান দেয়নি। ‘ওয়ান শট মুভি’ বলে কারেকশান সম্ভব নয় বলে তারা জানায়।”

এদিকে ফারুকী গ্লিটজকে বলেন, “তারা ফোনে শুধু একটি কারেকশান চেয়েছিলেন, তা হল সিনেমার শেষে যেন একটি লাইন যুক্ত করা হয়। তা হলো- ‘সন্ত্রাসীরা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়’। আমরা সেটা দিতে সম্মত হই।”

সেন্সর বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ পাননি বলে জানান ফারুকী।

তিনি বলেন, “আমরা কাগজপত্র হাতে না পাওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না যে কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে, এতটুকু বলতে পারি, চলচ্চিত্রটি বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।”

চলচ্চিত্রটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফিলিস্তিনের অভিনেতা ইয়াদ হুরানি, অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, জাহিদ হাসান, মামুনুর রশীদ ও কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর মহড়ার পর শুটিং শুরু হয় গত বছর ৫ জানুয়ারি। ছবিটি বাংলাদেশ থেকে প্রযোজনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ছবিয়াল এবং ভারতের শ্যাম সুন্দর দে।