‘স্ক্যান্ডাল ছড়ানোর জন্য অনেকে উঠে পড়ে লেগেছে’

গুঞ্জন রটেছে, স্বামীর সঙ্গে অভিনেত্রী কুসুম শিকদারের বিচ্ছেদ হয়েছে। সেই গুঞ্জনকে ঘিরে গ্লিটজের সোজাসাপ্টা কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হলেন তিনি। 

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2017, 01:38 PM
Updated : 11 Oct 2017, 01:56 PM

গ্লিটজ: আপনার বিচ্ছেদ নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। আপনি কী বলবেন?

কুসুম শিকদার: বিগত কয়েকদিন ধরেই দেখছি, নির্দিষ্ট একটা গ্রুপ আমার সম্পর্কে নেগেটিভ কথা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তার মধ্যে দেখা গেছে, পাঁচ ভাগ হয়তো সত্যি, কিন্তু সেটাকে তারা পাঁচের পর একটা শূন্য লাগিয়ে পঞ্চাশ ভাগ বানিয়ে ফেলছে এবং তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি খুব হতাশ।

ঝামেলা তো সবক্ষেত্রেই হয়। বাবা-মার সঙ্গেও হয়, স্বামীর সঙ্গেও হয়। আবার বন্ধুর সঙ্গেও হয়। তার মানে তো এই না যে, আমরা সারা জীবনের জন্যে সম্পূর্ণভাবে আলাদা হয়ে যাচ্ছি।

এই পাঁচ ভাগ ঝামেলাটাকে অনেকে পঞ্চাশ ভাগ করে ছড়াচ্ছে চারদিকে। এটা দুঃখজনক। কেন জানি না, আমার স্ক্যান্ডাল ছড়ানোর জন্য অনেকে উঠে পড়ে লেগেছে।

এটা আমি খুব ভালো করে জানি। যতদিন ফ্যান-ফলোয়ার্সরা আমার সঙ্গে থাকবে ততদিন পর্যন্ত এই পাঁচ ভাগ ঘটনা কখনো পঞ্চাশ ভাগে যাবে না।

গ্লিটজ: মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’ নিয়ে তৈরি হওয়া বির্তককে ঘিরে নাকি স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছে? এমন বার্তাও ছড়িয়েছে।

কুসুম শিকদার: আমি একটা উদাহরণ দিই। ১৭ সেপ্টেম্বর বেশকিছু অনলাইন পোর্টাল ও কিছু পত্রিকার খবর থেকে জানলাম, আমাদের নামে মামলা করা হয়েছে।

সত্যি বলতে আজ দশদিন পেরিয়ে গেলেও আমার কাছে কিংবা বঙ্গ’র কাছে মামলার কোনো কাগজ পৌঁছায়নি। মানে পত্রিকায় নিউজ না হলে এতদিনেও জানতাম না যে, আমাদের নামে মামলা হয়েছে।

উদাহরণটা এজন্যই দিলাম যে, যদি কালকে অনলাইন পোর্টালে কিংবা নিউজপেপারে আমার বিচ্ছেদের খবরটা জানি, তাহলে ওইভাবেই জানতে পারবো। যেটা আসলে আমি নিজেই জানি না।

গ্লিটজ: গুঞ্জনের বার্তাগুলো কারা ছড়াচ্ছে বলে আপনি মনে করছেন?

ছবি: কুসুম শিকদারের ফেইসবুক থেকে নেওয়া।

কুসুম শিকদার:
যারা আমাকে নিয়ে কথা বানায়, তারা আমার পরিচিত। পরিচিত না হলে আমার সম্পর্কে রিউমার ছড়িয়ে তাদের তো কোনো লাভ নেই। অপরিচিত কেউ তো এভাবে বলবে না। তাদের কী লাভ? কিন্তু পরিচিত মানুষরা এধরনের কথাগুলো ছড়িয়ে কোনো না কোনোভাবে সুবিধা পায়। তাই করে।

গ্লিটজ: আরেকটি প্রশ্ন উঠেছে, আপনার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টের রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস ‘সিঙ্গল’ কেন?

কুসুম শিকদার: এটা অনেক আগে থেকেই ছিল। আসলে ‘ম্যারিড’ করা হয়নি। কারণ ফেইসবুকে আমি লেখালেখিও কম করি। মাঝে মাঝে কিছু সেলফি পোস্ট করি। মাঝে দু’তিন বছর আগের ছবিগুলো ভেসে আসে। সেই ছবিগুলো পোস্ট করি। তাছাড়া ফেইসবুকে আমি কিছু লিখি না, কখনোই লিখি না। এমনকি ছবির উপরে ক্যাপশনও কবে যে দিয়েছি মনে নাই!

গ্লিটজ: ‘সিঙ্গল’ স্ট্যাটাসে আপনি আপনার সংসারকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ আছে।

কুসুম শিকদার: না কখনোই না। আমার বিয়ের সময় অনলাইন পোর্টালগুলো ছিল না বলে অনেকেই জানে না। বিয়ে হয়েছে ২০০৭ সালে। আর এনগেজমেন্ট হয়েছে ২০০৬ সালে। অনেক আগের কথা। তখন কিন্তু খুব বড় করে, ধুমধাম করেই সব বিয়ের প্রোগ্রাম হয়েছে। এনগেজমেন্টে মিডিয়ার এমন কেউ ছিল না যে যায়নি। ২০০৭ সালে হলুদ ও বিয়ের প্রোগ্রামে মিডিয়ার অনেকেই ছিল।

অনেকদিন হয়ে গেছে তো তাই অনেকে ভাবে, লুকাই। সেকারণে তো আর বিয়ে নিয়ে কেউ কথা বলে না। বিচ্ছেদ হলে হয়তো কথা বলবে! আমি যে ইন্টারভিউগুলো দিই সেখানেও স্বামীকে নিয়ে কথা থাকে। কয়েকদিন আগে একটি রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমার স্বামীর কথাও বলেছি। শ্বশুরবাড়ির কথা বলেছি।

গ্লিটজ: সম্প্রতি গণমাধ্যমে অভিনয় ছাড়ার কোনো স্টেটমেন্ট দিয়েছেন?

ছবি: কুসুম শিকদারের ফেইসবুক থেকে নেওয়া।

কুসুম শিকদার:
এমন নিউজ ওরা কেন ছাপালো আমি জানি। ১৭ সেপ্টেম্বর মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’-র মামলা নিয়ে লেখালেখির পরে আমি খুব আপসেট ছিলাম। একটি রেডিওতে লাইভ অনুষ্ঠানে রাগ করে বলেছিলাম, ‘ওরা যেভাবে কথা বলে আমার তো মাঝে-মধ্যে কাজ করতে ইচ্ছা করে না।’ ব্যাপারটা ছিল এরকম।

পুরো রেকর্ডটা এখনো ফেইসবুকে আছে। এটা চাইলেই যে কেউ শুনতে পারেন। কাজ ছাড়ার কথা আমি একদমই বলিনি। সত্যি কথা বলতে, আমি তো কাজই কম করি (হা হা)। ছাড়ব কীভাবে?

গ্লিটজ: অভিযোগ উঠেছে, মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’ নিয়ে আপনি স্টান্টবাজি করছেন।

কুসুম শিকদার: এটা আমিও শুনেছি। উত্তরও অনেকবার দিয়েছি। আমি ২০০২ সালে লাক্স-আনন্দধারা মিস বাংলাদেশ ফটোজেনিকে (বর্তমানে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই কাজ শুরু করি। ১৫ বছর আগে মাথায় এরকম একটি মুকুট দিয়ে আমার পথচলা শুরু।

তারপর আমার প্রথম সিনেমা ‘গহীনে শব্দ’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। দ্বিতীয় সিনেমা ‘লালটিপ’ তখনকার দিনে বাণিজ্যিক সিনেমার পাইওনিয়ার। ‘লালটিপ-এর পর সবাই ওই ধরনের সিনেমা বানানো শুরু করে। তারপর ‘শঙ্খচিল’ ভারতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে।

সুতরাং এখন পর্নোগ্রাফির মামলা বানিয়ে আলোচনায় আমার আসার দরকার নাই। আমার অভিনয় জীবন শুরুই হয়েছে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। বড় বড় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী আমি। এই ধরনের স্টান্টবাজি করার প্রয়োজন আমার নাই।

গ্লিটজ: মিউজিক ভিডিওটির বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফির মামলা নিয়েও সমালোচনা চলছে।

কুসুম শিকদার: অনেকে বলছে, আমি স্টান্টবাজি করছি। কেন বলেছে? এটা অবিশ্বাসযোগ্য, সেকারণে। এটা যদি পর্নো হত তাহলে তো কেউ বলত না কুসুম স্টান্টবাজি করছে। তাহলে সবাই বলত, এটা তো আসলে পর্নোই। সেটা হতেই পারে। যেহেতু এটা পর্নো না সেহেতু মামলা করাটা হাস্যকর ব্যাপার।

সেকারণেই সবার সন্দেহ হচ্ছে, কুসুম এটা করাচ্ছে। এটা সাধারন ও  বাণিজ্যিক একটা মিউজিক ভিডিও। সেটা নিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলা হওয়ার কোনো যুক্তি নাই। সেকারণেই অনেকে অবাক হয়ে বলছে, এটা কুসুম করাচ্ছে।

আমাদের সিনেমাতে যে কন্সটিটিউশন আছে সেখানে ক্লিভেজ দেখানো যায় না, পেট দেখানো যায় না। কিন্তু এগুলো দেখিয়ে দেখিয়ে সিনেমা, মিউজিক ভিডিও, নাটক-সবই হচ্ছে। এমনকি এগুলোও আমার মিউজিক ভিডিওতে নাই, পর্নো তো বহু দূরের কথা। অশ্লীল আর শ্লীলের মধ্যে খুব সূক্ষ্ম সুতা আছে, সুতাটা অনেকে ধরতে পারে না।