চীনা বসন্ত রঙ ছড়াল শীতের ঢাকার মঞ্চে

নাচের মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে চীনা নৃত্যশিল্পীরা স্বাগত জানান নতুন বছরকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2024, 06:46 PM
Updated : 17 Jan 2024, 06:46 PM

বর্ণিল নাচের ছন্দ, গানের সুর আর যন্ত্রসংগীতের মূর্ছনায় ঢাকায় হয়ে গেল চীনা বসন্ত উৎসব; যেখানে মেলবন্ধন ঘটল দুই দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের।

বুধবার রাতে শিল্পকলা একাডেমিতে ‘বসন্তের কণ্ঠস্বর, সোনালী স্বপ্ন’ শিরোনামে এ উৎসবের আয়োজন হয়। ঢাকায় চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যৌথভাবে এই আয়োজনে ছিল ইউনান প্রদেশের তথ্য অফিস এবং পররাষ্ট্র দপ্তর।

উৎসবে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় নৃত্য পরিবেশনায়। নাচের মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে চীনা নৃত্যশিল্পীরা স্বাগত জানান নতুন বছরকে।

এরপর ছিল ‘চায়নিজ অ্যাক্রোবেটিকস শোল্ডার ব্যালে’, রবীন্দ্রনাথের ‘বিপুল তরঙ্গ রে' এবং কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতাকে ধারণ করে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা।

গানের সুর আর সমবেত নাচে পরের পরিবেশনায় তুলে ধরা হয় প্রেমগাথা। মঞ্চের এক পাশে চীনা কণ্ঠশিল্পী আনা সিউর গানের সঙ্গে দৃশ্যপট তুলে ধরেন ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নৃত্যশিল্পীরা।

সিলেটের সফির উদ্দিন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘দে তালি বাঙালি’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন। এই পরিবেশনার মাঝে ফুটিয়ে তোলা হয় বাঙালির গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য। একাডেমির শিল্পীরা পরিবেশন করেন ধামাইল।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনার দ্বিতীয় পর্বে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত অ্যাক্রোবেটিক শো ‘ড্রাম পেডালিং’ নিয়ে মঞ্চে আসেন ইউনানের শিল্পীরা। গানের ছন্দে ড্রাম নিয়ে নানা কসরত দেখান তারা।

আরো ছিল ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যন্ত্রসংগীত ‘গোল্ডেন ইকোজ’। কুনমিং সিটি কলেজের অর্কেস্ট্রা দল পরিবেশন করে চীনা লোকসংগীত।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘকালের সৌহার্দ্যময় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের উন্নয়ন অংশীদারত্বও বাড়ছে ক্রমান্বয়ে।

“আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীন সফর করেছেন। একই সময়ের চীনের চো এনলাইও এদেশে এসেছেন। দুই দেশের সম্পর্ক এখন আরও মজবুত হয়েছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নের নতুন দরজা খুলেছেন। সেই বাস্তবতায় বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে।”

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বসন্তের মাধ্যমে চীনা বর্ষপঞ্জির শুরু হয়। সীমানা পেরোনো সে আয়োজনটি নানা দেশের পাশাপাশি হচ্ছে বাংলাদেশেও। এ উৎসবের মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আগামী দিনে আরো বেশি গুরুত্ববহ হবে।

কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দুই দেশ এখন শিল্প-বিনিময়ের ‘অনন্য সময়’ অতিবাহিত করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।