এই গণসংগীত শিল্পীর দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবসে ‘কথা-গানে ফকির আলমগীরকে স্মরণ' অনুষ্ঠান করেছে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী।
Published : 23 Jul 2023, 11:10 PM
গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীরকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার দাবি উঠেছে তার দ্বিতীয় প্রয়াণবার্ষিকীতে আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে।
রোববার বিকালে ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী ‘কথা-গানে ফকির আলমগীরকে স্মরণ' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী সুজেয় শ্যামকে ‘ফকির আলমগীর স্মৃতিপদক’ দেওয়া হয়।
পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে সুজেয় শ্যাম বলেন, "ফকির আলমগীর ছিল আমার অনুজ৷ দেশে গণসংগীতকে সে টিকিয়ে রেখেছে৷ তার স্মৃতিতে ধরে রাখতে যে পদক, সেটি পেয়ে আমি আনন্দিত। এ সম্মাননা আমার কাছে বিশেষ৷"
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “বিজয় নিশান উড়ছে ঐ গানটি সুর করেছেন সুজেয় শ্যাম। আমি তো মনে করি, শুধুমাত্র এই একটি গানের জন্যই সুজেয় শ্যামের স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া উচিত। সুজেয় শ্যাম স্বাধীনতা পুরস্কার পাননি, ফকির আলমগীরও স্বাধীনতা পুরস্কার পাননি। আমি দাবি জানাই এ দুজন গুণী শিল্পীকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হোক।"
এর জবাবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, “স্বাধীনতা পুরস্কার আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়, তবুও যদি স্বাধীনতা পুরস্কারের সভায় আমার কথা বলার সুযোগ হয়- আমি ফকির আলমগীরের কথা বলব, যেন ফকির আলমগীরকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।"
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন অতিথিরা। পরে আয়োজক সংগঠক ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
পরে স্মৃতিচারণ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, "ফকির আলমগীর আমার ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন, যার জন্য অনেক আগে থাকেই তার সাথে আমাদের পারিবারিকভাবে যোগাযোগ ছিল। আমি যখন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছি, তিনি আমার মন্ত্রণালয়ে যেতেন। আমি তার সাথে দুষ্টুমি করতাম। এখন আর কার সাথে দুষ্টুমি করব? ফকির আলমগীরের সাথে অনেক স্মৃতি আমার।"
অনুষ্ঠানে ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর বলেন, “তাকে আমি ৪৪ বছর কাছ থেকে দেখেছি। তিনি আমাকে কোনো কষ্ট দেননি। সব রকম দুর্যোগে তিনি মানুষের পাশে ছুটে গেছেন। তার যে উচ্ছ্বাস, সেটি এখন আর দেখা যায় না। গণসংগীত মানেই যেন ফকির আলমগীর।"
এ সময় দেশে একটি গণসংগীত একাডেমি তৈরির জন্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী সুজেয় শ্যামের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান সুরাইয়া আলমগীর। তিনি বলেন, “সুজেয় শ্যামের চিকিৎসার দায়িত্ব যেন সরকার থেকে করা হয়, আমি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করব। তিনি যেন প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থা করেন।
সুরাইয়া আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এই পর্বে আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ, শাহাদাৎ হোসেন নিপু, রফিকুল ইসলাম ও মাসুম আজিমুল বাসার। সংগীত পরিবেশন করেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী।
দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছে- ক্রান্তি, উদীচী, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, পঞ্চভাস্কর, আনন্দন, ভিন্নধারা, উজান, সমস্বর, সুরসাগর, সুরতাল, উঠোন ও ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা।