“আপনি আরণ্যক তথা সকল থিয়েটারের সন্তানদের মনের কোনে বেঁচে থাকবেন," স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি।
Published : 18 Sep 2024, 02:16 AM
নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদের স্ত্রী গওহর আরা মামুন মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকার ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মামুনুর রশীদের ভাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রশীদ আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সপ্তাহ বা ১০ দিন আগে উনার ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে তাকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেও আরেকবার হার্ট এটাক হয়।
“এরপর চিকিৎসা প্রক্রিয়া চলছিল। মাঝে একটু ভালোর দিকে ছিলেন। পরে স্থানান্তর করে বাংলাদেশ মেডিকেলে আনা হয়। এখানেই শেশ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।"
মামুনুর রশীদের ছেলে পল্লব বিদেশ থেকে রাতে দেশে ফিরবেন বলে রশীদ আমিন তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার বাদ জোহর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, তারপর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।"
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ফেইসবুকে লিখেছেন, “আমাদের নাট্যগুরু মামুনুর রশীদের সহধর্মিনী গওহর আরা মামুন (টুলী ভাবি) আজ (মঙ্গলবার) পরলোক গমন করেছেন। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
"বৃহত্তর আরণ্যক পরিবারের সকল সদস্যের কাছে টুলী ভাবি ছিলেন মাতৃসম। শাসনে আর আদরে আরণ্যক পরিবারকে অতি আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। আজ আমরা সবাই গভীরভাবে শোকাহত। ভাবি যেন পরপারে অপার শান্তি লাভ করেন। মাতৃসম টুলী ভাবির স্নেহের স্পর্শ যেন আরণ্যক পরিবারের সকলের জন্য চির আশীর্বাদ হয়ে থাকে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা, টুলী ভাবি যেন বেহেস্তবাসী হন।"
আরণ্যক নাট্যদলের সদস্য ও থিয়েটার পত্রিকা 'ক্ষ্যাপা'র নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী বলেন, " গওহর আরা মামুন আমাদের মাতৃস্নেহে ভালোবাসতেন। এ জন্য মামুন ভাইয়ের বাসাটা আমাদের নিজেদের বাসা মনে হত। নাট্যকর্মীদের কাছে ভীষণ আপনজন ছিলেন তিনি।"
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি ফেইসবুকে লিখেছেন, "আমাদের সকল নাট্যকর্মীর ভাবি, মামুনুর রশীদ ভাইয়ের স্ত্রী গহর আরা মামুন (টুলি ভাবি) চলে গেলেন। কত স্মৃতি, কত কথা মনে হচ্ছে! মানুষের জীবন কত ছোট, কত সংক্ষিপ্ত এ সফর তা কেউই আমরা একটিবারও ভাবি না।"
গওহর আরা মামুনকে ভীষণ সংসারি মানুষ হিসেবে বর্ণনা করে শাহনাজ খুশি বলেন, "তিনি ছিলেন ঠিক মামুন ভাইয়ের বিপরীত। মাতৃত্বের এক বাঁধানো ফ্রেম যেন। আরণ্যক থিয়েটারের ছোট-বড় সব সদস্য তার সে মাতৃত্বের শাসন এবং সোহাগ পেয়েছে। থিয়েটারের সদস্যদের নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে এক সময় ৪৭/১ এর ইন্দিরা রোডে ভাবির বাড়িতে। সব ভেঙে নতুন করে হয়ত গড়া যায়, শুধু স্মৃতির পুনর্গঠন সম্ভব না। আপনি আরণ্যক তথা সকল থিয়েটারের সন্তানদের মনের কোনে বেঁচে থাকবেন।"