দূষণের রাজা কে?

ক্ষমতায় তারা সবার চেয়ে এগিয়ে, সেই সঙ্গে দূষণেও।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2021, 05:04 AM
Updated : 30 Oct 2021, 09:06 AM

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনকারী দেশের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে চীন আর যুক্তরাষ্ট্র।

জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় কার্বন গ্যাস নির্গমন কমানোর কোনো উদ্যোগই সফল হবে না, যদি এই দুটো দেশকে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করা না যায়।

সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন করছে, চীন বাতাসে ছড়াচ্ছে তার দ্বিগুণ গ্যাস। তবে ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি গ্যাস নির্গমন ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ।

শক্তি তৈরির জন্য যখন জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো হয়, সেখান থেকে বাতাসে মেশে বিভিন্ন কার্বন গ্যাস, এর বেশিরভাগটাই কার্বন ডাইঅক্সাইড। এসব গ্যাস সূর্যের আলো থেকে তাপ ধরে রাখে। ফলে বাড়তে থাকে পৃথিবীর তাপমাত্রা।

এই বাড়তি তাপমাত্রাই বদলে দিচ্ছে জলবায়ু, এক দিনে বরফ গলে যাচ্ছে, আরেক দিকে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। চরম আবহাওয়া ডেকে আনছে মৃত্যু আর ধ্বংস।  

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিপর্যয় এড়াতে হলে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি কমিয়ে আনতে হবে। সেজন্য কমাতে হবে কার্বন গ্যাস নির্গমন। ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বনেতারাও তাতে একমত হয়েছিলেন। 

আগামী রোববার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ২৬তম জলবায়ু সম্মেলনে মিলিত হচ্ছেন বিশ্ব নেতারা। ২০৩০ সালের মধ্যে কোন দেশ কার্বন নির্গমন কতটা কমাবে, সেই পরিকল্পনা সেখানে তুলে ধরার কথা। আর যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কী পরিকল্পনা দেয়, সেটা থাকবে সবার মনোযোগের কেন্দ্রে।

দূষণে চীনের ভূমিকা কতটা?

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ করা ১০টি দেশের একটি তালিকা দিয়ে সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি গ্যাস নির্গমন করেছে চীন।

এ তালিকায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর রয়েছে ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, ব্রাজিল, জাপান, ইরান ও সৌদি আরব।

বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গমনে ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায় চীন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান রোডিয়াম গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর আগে ২০১৯ সালে চীনের গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ বিশ্বের উন্নত সকল দেশের মোট নির্গমনকেও ছাড়িয়ে যায়। 

২০১৯ সালে চীনের নির্গমন দাঁড়ায় এক হাজার ৪১০ কোটি মেট্রিক টন, যা বিশ্বের মোট নির্গমনের চার ভাগের এক ভাগ।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্গমন ছিল ৫৭০ কোটি টন, যা বিশ্বের মোট নির্গমনের ১১ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে থাকা ভারত ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্গমন ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন পরিমাপে কোনো একটি দেশ প্রতিবছর তাদের ভৌগলিক সীমানায় বাতাসে কী পরিমাণ গ্যাস যোগ করছে তার হিসাব করেন বিজ্ঞানীরা।

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে যেখানে আছে, সেখান থেকেই কার্বণ গ্যাস নিঃসরণ হতে পারে। পেট্রলচালিত গাড়ি , বিমান চলাচল, কয়লা থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ দিয়ে ভবনের বাতি জ্বালানো কিংবা তাপ উৎপাদন, প্রাকৃতিক গ্যাস কিংবা তেলের ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শিল্প- সবই রয়েছে এর মধ্যে। আবার বন ধ্বংসের কারণেও বাতাসে কার্বন ঘনত্ব বাড়ে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দায়

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বর্তমান অবস্থার জন্য নির্গমনের ঐতিহাসিক বাস্তবতাও জড়িত। বর্তমানে চীন সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ করলেও সব মিলিয়ে হিসেব করলে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।

১৮৫০ সাল থেকে চীন যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গমন করেছে, একই সময়ে তার প্রায় দ্বিগুণ নির্গমন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। 

সিএনএন লিখেছে, এমন দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্বের আর কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস বায়ুমণ্ডলে যুক্ত করেনি।

সাম্প্রতিক সময়ের বৈশ্বিক উষ্ণায়নে কয়েকশ বছর আগের নির্গমনও দায়ী।শিল্প বিপ্লব শুরুর পর থেকে এ পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই রাখতে হবে।
২০০০ সালের পর তড়িৎগতিতে উন্নয়নের মধ্যে চীনের কার্বন নির্গমন বাড়তে শুরু করে। এছাড়া উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অনেক দেশেই শিল্পায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ২০০ বছর ধরে জলবায়ুর ক্ষতিকর পরিবর্তন করে এমন গ্যাস নির্গমন করে যাচ্ছে শিল্পোন্নত দেশগুলো।

উন্নত দেশে আয়েশি জীবন-যাপনের জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে জলবায়ুর বড় ধরনের ক্ষতির দামে।

জলবায়ু ও জ্বালানি নীতি নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘কার্বন ব্রিফ’ এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী  ১৮৫০ সাল থেকে ২৮ হাজার ৪০০ কোটি টন কার্বন নিঃসরণ করেছে চীন।

অন্যদিকে আরও আগে শিল্পায়নের পর্ব পার হয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্রের কার্বন নির্গমন হয়েছে ৫০ হাজার ৯০০ টন, যা চীনের প্রায় দ্বিগুণ।

মাথাপিছু দূষণেও এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র

ছোট দেশের তুলনায় ১৪০ কোটি মানুষের বিশাল জনসংখ্যার দেশ চীনে বেশি মাত্রায় নির্গমন হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের চেয়ে চীনা নাগরিকদের মাথাপিছু গড় নিঃসরণ কম।    

রোডিয়াম গ্রুপের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে চীনের মাথাপিছু নির্গমন ছিল ১০ দশমিক ১ টন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এর পরিমাণ ছিল ১৭ দশমিক ৬ টন।

জ্বালানি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘এনারডেটার’ তথ্য তুলে ধরে ‘ক্লাইমেট ট্রান্সপারেন্সি ২০২১ রিপোর্টে’ বলা হয়েছে, মাথাপিছু দূষণের এই পরিমাণ জীবন যাপন পদ্ধতির ওপরও খানিকটা নির্ভর করে।

আমেরিকান নাগরিকরা বেশি অর্থ আয় করে, তারা জ্বালানি হিসেবে বেশি গ্যাস লাগে এমন গাড়ির মালিক এবং চীনা নাগরিকদের তুলনায় তারা উড়োজাহাজে চলাচল করে বেশি।

তার মানে চীনের নির্গমন কমাতে হবে না- তা নয়। গত ২০ বছর ধরে চীনের মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার তিনগুণ বেড়ে ধনী দেশগুলোর কাছাকাছি চলে এসেছে।   

এখনও জীবাশ্ম জ্বালানির আধিপত্য

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘এনারডেটার’ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে চীনে ৮৭ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ হয়েছে কয়লা থেকে, ২০ শতাংশ তেল এবং ৮ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের ৮০ শতাংশ তৈরি হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এছাড়া ৩৩ শতাংশ তেল থেকে, ৩৬ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে এবং ১১ শতাংশ কয়লা থেকে উৎপাদিত হয়েছে।

কয়লার চেয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে দূষণ কম হয়, তবে যেটুকু কার্বন তাতে বাতাসে মেশে, সেটাও জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির চেয়ে গ্যাস ব্যবহারে বেশি বিনিয়োগ করায় এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বিজ্ঞানীদের।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কয়লা উৎপাদন করে চীন। বিশ্বে ব্যবহৃত মোট কয়লার অর্ধেকের বেশি চীনেই ব্যবহৃত হয়।

বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হয় এমন নানা পণ্য এবং উপকরণ তৈরি করে চীন। সে কারণে চীনকে বলা হয় ‘পৃথিবীর কারখানা’।

জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি স্টিল এবং সিমেন্ট তৈরি করে চীন। ভারী শিল্পে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন এর ব্যবহার শুরু হলেও এটা এখনও ব্যাপক মাত্রায় পাওয়া যায় না।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, কেবল এই দুটি শিল্প থেকে চীনে যে মাত্রায় কার্বন নির্গমন করে, তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট কার্বন নির্গমনের চেয়ে বেশি। 

সংস্থাটি বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে হলে বিশ্বের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৯০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসতে হবে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ হতে হবে বায়ু এবং সৌরশক্তি থেকে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে চীন

কয়লার ওপর নির্ভরশীল বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন নির্গমনকারী দেশ হলেও বিপুল পরিমাণ নবায়নযোগ্য জ্বালানিও উৎপাদন করে চীন।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন প্রায় একই কাতারে আছে। চীনে উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশই আসে বায়ু, সৌর, জলবিদ্যুৎ, তাপ, জৈব উপাদান এবং আবর্জনা থেকে। 

যুক্তরাষ্ট্রও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই, দেশটিতে এ ধরনের নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন হয় ৯ শতাংশ বিদ্যুৎ। তবে এর অর্ধেকই হয় জৈব উপাদান থেকে। এর মধ্যে রয়েছে গাছ থেকে পাওয়া কাঠ, শৈবাল কিংবা পশুবর্জ্য। বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, এসব উপকরণ সবসময় নবায়নযোগ্য নয়।

চীন যেহেতু সার্বিকভাবে বেশি মাত্রায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, তাই বাস্তবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করে দেশটি।

গবেষণা সংস্থা ‘এনারডেটার’ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বায়ু এবং সৌরশক্তি থেকে ৭ লাখ ৪৫ হাজার গিগাওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন করেছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার গিগাওয়াট-আওয়ার।

‘রিনিউয়েবলস ২০২১ গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ বলছে, সক্ষমতার বিচারে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের স্থাপনা নির্মাণ করা চীন এ দিক দিয়ে ২০২০ সালে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল।

বড় বড় সৌর এবং বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প করেছে চীন, যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি ‘সোলার পিভিএস’ এবং বায়ুচালিত পাখাও তৈরি করেছে দেশটি।

রিনিউয়েবলস প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বড় একটি বাজার রয়েছে। বিশ্বে যত বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিক্রি হয়, তার ৩৮ দশমিক ৯ শতাংশই চীনে, আর যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।  

সবশেষে কী দাঁড়ায়?

সিএনএন লিখেছে, জলবায়ু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা চীনের চেয়ে বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে তার দেশ কার্বন নির্গমনের মাত্রা ২০০৫ সালের তুলনায় অর্ধেকে নামিয়ে আনবে।

কিন্তু চীন রয়েছে শিল্পায়নের ভিন্ন একটি পর্যায়ে। ফলে নির্গমন কমানোর ক্ষেত্রে দেশ দুটির ন্যায্য অংশ কী হওয়া উচিত সেই প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানিতেও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের জলবায়ু নীতি কতোটা সমর্থন পায়, সেটাও দেখার বিষয়। আর চীন নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ‘কার্বন ঘনত্বের’ মানদণ্ডে। সেখানে জিডিপি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্বন নির্গমণ বাড়ার সুযোগ থেকে যায়। ফরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনার তুলনা করা কঠিন।

কার্বন নির্গমনের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের কাছে চীন যে পরিকল্পনা জমা দিয়েছে, সেখানে দেশটির আগের অবস্থানের খুব সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে।

বিভিন্ন দেশের লক্ষ্যমাত্রা বিশ্লেষণ করা ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার’ বলছে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা চীনের চেয়ে ‘ভালো’।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি সীমার মধ্যে ধরে রাখতে দুই দেশের নীতিই মোটামুটি ঠিক আছে। তবে কার্বন নির্গমন কমানোর ন্যায্য অংশ কেমন হবে তার বিচারে দুই দেশের পরিকল্পনাই ‘কম’ রেটিং পেয়েছে।

অর্থাৎ, চীন কিংবা যুক্তরাষ্ট্র কার্বন নির্গমন যথেষ্ট পরিমাণ কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে না এবং পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারও যথেষ্ট দ্রুত কমাচ্ছে না।