এতে দেখা গেছে, ভারত, সৌদি আরব, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন বদলে দিতে চাইছে। তারা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে দ্রুত সরে আসার প্রয়োজনীয়তাকে কম গুরুত্ব দিয়ে দেখানোর জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ জানাচ্ছে।
তাছাড়া, সম্পদশালী কয়েকটি দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার জন্য গরিব দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থায়ন করা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রশ্নে দেশগুলোর এই অবস্থান এবং ‘লবি’ নভেম্বরে গ্লাসগোয় অনুষ্ঠেয় কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলনকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
বিশ্বকে উষ্ণতার হাত থেকে বাঁচাতে জাতিসংঘ কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার উপর জোর দিচ্ছে। বিশ্ব ঊষ্ণায়ন নির্ধারিত ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশ্বের দেশগুলো কতদূর এগিয়েছে তা জিজ্ঞেস করা হবে কপ২৬ সম্মেলনে।
আর এ সম্মেলনের মাত্র কয়েকদিন আগে এই লক্ষ্য পূরণে কাজ করার জন্য জাতিসংঘের সুপারিশের বিরুদ্ধে সংস্থাটির ওপর বিশ্বের দেশগুলোর চাপ সৃষ্টির নথি ফাঁস হল। এতে দেখা গেছে, বেশ কিছু দেশ এবং সংস্থা যুক্তি দিচ্ছে যে, জাতিসংঘ প্রতিবেদনে যত দ্রুত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার কথা বলা হচ্ছে, আসলে তত দ্রুততার প্রয়োজন নেই।
সৌদি আরবের তেল মন্ত্রণালয়ের এক উপদেষ্টা দাবি করেছেন, প্রতিবেদন থেকে 'সর্বস্তরে জরুরি-ভিত্তিতে (জীবাশ্ম জ্বালানি) কমানোর ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন'- এ ধরনের কথা বাদ দিতে হবে। আবার অস্ট্রেলিয়া সরকারের এক ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা বলছেন, 'কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন'- এমন উপসংহার টানা যাবে না প্রতিবেদনে।
ওদিকে, ভারত আগেই জাতিসংঘকে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী কয়েক দশকেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন চালু রাখবে তারা। ভারত এখনও বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কয়লা ব্যবহারকারী দেশ। ভারতের ৭০ ভাগেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় কয়লা।
তাই কপ২৬ সম্মেলনের আগে দিয়ে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী বিজ্ঞানীদের টিমকে ভারত জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে কয়লা বাদ দেওয়া কঠিন।