Published : 01 Dec 2023, 09:17 PM
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যে কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলন শুরু হয়েছে, সেই সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- তাতে নজর রাখবেন অংশগ্রহণকারীরা।
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অংশগ্রহণকারীরা বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় নিবন্ধনের জন্য লাইনে দাঁড়ান। শুক্রবারও অনেকে নিবন্ধন সারেন। এ আয়োজন নিয়ে দুবাইয়ে তেমন প্রচার দেখতে না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
হিন্দুস্থান টাইমসের সাংবাদিক পূজা দাস বললেন, “আলো ঝলমল দেশের আয়োজন। বিমানবন্দর থেকে নামার পর কোথাও বৈশ্বিক এই সম্মেলনের তেমন প্রচার দেখলাম না। এগুলো থাকলে ভালো লাগত।”
ব্রাজিলের অংশগ্রহণকারী মেরিনা ফেব্রিতাসের কণ্ঠেও একই সুর। তার ভাষ্য, “আফ্রিকার ছোট দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি সংবলিত নানা উপকরণ নিয়ে উপস্থিত হয়ে জলবায়ু দূষণের জন্য দায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। দুবাইয়ের আর্থিক ক্ষমতা ছিল; কিন্তু সে অনুযায়ী প্রচার কম।”
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পৃথিবীর টিকে থাকার লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু ঝূঁকির জন্য দায়ী রাষ্ট্রগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজতে বলেছেন।
জীবাশ্ম-জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে যেসব দেশ বেশি কার্বন নির্গমন করে থাকে, তার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। কপ২৮ সম্মেলনে আমিরাতের জাতীয় তেল কোম্পানি অ্যাডনকের প্রধান নির্বাহী সুলতান আল-জাবেরের সভা প্রধান হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির পাঁচটি বিষয় বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ রাষ্ট্রগুলো কী কী বাস্তবায়ন করেছে তা এবারের সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে। জলবায়ু অর্থায়ন, ক্ষয়ক্ষতি পূরণের তহবিল, জলবায়ু-উদ্বাস্তু, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা।
বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যেন না বাড়ে, সম্ভব হলে প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশির যাতে তাপমাত্রা রাখা যায়, তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে রাজি হয়েছিল দেশগুলো।
এটাই প্যারিস চুক্তি নামে পরিচিত; এই চুক্তির ফলে কার্বন নিঃসরণ ২০৫০ সালের মধ্যে কার্যত শূন্যে নামিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশকে এখন কার্বন নিঃসরণ ব্যাপক হারে কমাতে হবে।
চীনা নারী পর্যবেক্ষক বিপিয়াঙ বলেন, “বড় দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে আন্তরিকভাবে কাজ না করলে এবং প্যারিস ডিক্লারেশন অনুযায়ী ঝূঁকি কমিয়ে আনতে না পারলে এসব আয়োজনের সার্থকতা আসবে না।”
অংশগ্রহণকারীদের একজন বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডেজেনাস নলেজের (বারসিক) প্রোগ্রাম অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এবার আফ্রিকার বঞ্চিত ও নিম্নকণ্ঠের মানুষের জোড়ালো উপস্থিতি দেখছি। প্যারিসচুক্তির অঙ্গীকারগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হলো তা এবারের আলোচনার জোড়ালো বিষয়। আশা করছি, রাষ্ট্র প্রধানরা এবার গুরুত্ব দেবেন।”