সিএমএসএমই থেকে মাঝারি উদ্যোগকে বের করার প্রস্তাব

কুটির, অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সুবিধা রাখার প্রস্তাবও করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2023, 06:31 PM
Updated : 23 Jan 2023, 06:31 PM

কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য যে ঋণ নীতিমালা রয়েছে, সেখান থেকে মাঝারি শিল্পকে বাদ দিয়ে নতুন নীতিমালা চাইছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠকে এমন প্রস্তাব দেন সংগঠনের সভাপতি সামীর সাত্তারের নেতৃত্বে একদল ব্যবসায়ী।

সোমবার বিকালের এ বৈঠকের বিষয়ে সামীর সাত্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অর্থনীতির প্রাণ হচ্ছে সিএমএসএমই খাত। উৎপাদন খাতেও তাদের অবদান রয়েছে। কিন্তু ঋণ পেতে তাদের সবার সক্ষমতা একইরকম নয়।

“সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ঋণ নীতিমালা ও পুনঃঅর্থায়ন স্কিম সুবিধার তহবিল রয়েছে। সেখান থেকে ঋণ নিতে সবাইকে একই ধরনের নীতিমালা অনুযায়ী শর্ত মানা ও কাগজপত্র দিতে হয় ব্যাংককে।”

শিল্পের সংজ্ঞা অনুযায়ী মাঝারি উদ্যোক্তাদের আকার বেশ বড়। কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাঝারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কাঠামো, সক্ষমতা, কর্মী সংখ্যা, বিভিন্ন দপ্তরের অনুমতির বিষয়ে বড় ব্যবধান রয়েছে।

এসব বিষয় বৈঠক তুলে ধরেছেন জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, “সিএমএসএমই থেকে মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্রদের জন্য একটি পৃথক ঋণ নীতিমালা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।”

সহজ শর্তে ও তুলনামূলক কম কাগজপত্র জমা নিয়ে ব্যাংক ঋণ দিলে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র খাতের উদ্যোক্তারা সুফল পাবেন বলে মনে করছে ডিসিসিআই।

সরকারের শিল্পনীতি ২০১০ এর সংজ্ঞার আলোকে পরিবারের সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ জন দিয়ে পরিচালিত কিংবা জমি এবং কারখানা বাদে স্থায়ী সম্পদের মূল্য ৫ লাখ টাকার বেশি না হলে প্রতিষ্ঠানটিকে কুটির শিল্প হিসেবে ধরা হয়।

কর্মী সংখ্যা ১০ থেকে ২৪ জন দিয়ে পরিচালিত কিংবা জমি এবং কারখানা বাদে স্থায়ী সম্পদের মূল্য ৫০ লাখ টাকার বেশি না হলে প্রতিষ্ঠানটি অতি ক্ষুদ্র (মাইক্রো) হিসেবে বিবেচিত হবে।

অতিক্ষুদ্র সীমার পরবর্তী ধাপ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এক্ষেত্রে ১০ থেকে ৯৯ জন কর্মী দিয়ে পরিচালিত কিংবা জমি ও কারখানা বাদে স্থায়ী সম্পদের মূল্য ৫ লাখ থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে হলে প্রতিষ্ঠানটিকে ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে ধরা হবে।

কর্মী সংখ্যা ১০০-২৫০ জন কিংবা জমি ও কারখানা বাদে স্থায়ী সম্পদের মূল্য ১০ কোটি টাকা থেকে ৩০ কোটি টাকার বেশি না হলে প্রতিষ্ঠানটি মাঝারি খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

সবগুলো খাত একই কাতারে থাকায় ঋণ বা পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে ঢাকা চেম্বার সভাপতি এ ধরনের উদ্যোক্তাদের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সুবিধা রাখার প্রস্তাবও করা হয় বলে জানিয়েছেন।

বৈঠকে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোর মনিটরিং সেল গঠন, সিএসএমএসই পৃথক ডেস্ক সুবিধা চালু, রেমিটেন্স বাড়াতে প্রণোদনা বাড়ানো, রমজানের পণ্য আনতে এলসি সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।