আমদানি নির্ভর ভোজ্যতেলের চাহিদার মাত্র ১০% এখন দেশে উৎপাদিত হয়, জানান তিনি।
Published : 13 Oct 2022, 07:37 PM
আগামী তিন বছরে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ দেশীয় উৎপাদন থেকে যোগান দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেইটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট (কিআইবি) মিলনায়তনে এক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন আশার কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘বিদ্যমান শস্য বিন্যাসে তৈল ফসলের অন্তর্ভুক্তি এবং ধান ফসলের অধিক ফলনশীল জাতসমূহের উৎপাদন বৃদ্ধি’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, দেশের মোট ভোজ্যতেলের চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ এখন দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ৯০ শতাংশই আমদানি করা হয়। আমদানিতে ২ থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার খরচ হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আগামী তিন বছরে মোট চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে পূরণ করার লক্ষ্য নেওয়ার কথা জানান তিনি।
লক্ষ্য পূরণে কম আয়ুষ্কালের ধানের জাত প্রবর্তন করে সরিষাসহ অন্যান্য তৈল ফসলের চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের রাইস ফার্মিং সিস্টেম ডিভিশনের প্রধান মো. ইব্রাহিম জানান, তুলনামূলক কম আয়ুষ্কালের ধানকে বেছে নিয়ে দুই ফসলের মাঝে তৈল ফসলের চাষ করা হবে। এজন্য এক ফসলি জমি, দুই ফসলি জমি ও লবণাক্ত এলাকার জমি বেছে নেওয়া হচ্ছে।
ধান চাষের প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার পাশাপাশি তৈল ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তৈল ফসল হিসেবে সরিষা, তিল, বাদাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখীকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
এ পাঁচ তৈল বীজ উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আগামী তিন বছরে ভোজ্যতেল আমদানি অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে তার ভাষ্য।
কৃষিমন্ত্রী দেশে আগামীতে বাড়তি মানুষের খাদ্যের যোগান গবেষণালব্ধ নতুন জাতের ধান আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে করা হবে জানিয়ে বলেন, “সেক্ষেত্রে কৃষি বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার ৮৯, ৯২ ও বঙ্গবন্ধু-১০০ ধরনের ধান ভূমিকা রাখবে।”
কর্মশালয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, “এখন যে মূল্যস্ফীতি বা টাকার অমূল্যায়ন বা রির্জাভ সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ব্যাপক হারে খাদ্য আমদানি করতে হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হত।
“দেশের অর্থনীতির তিন খুঁটির প্রধানটি হচ্ছে কৃষি। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বাকি দুই খুঁটি।”
কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা যান্ত্রিকীকরণ এবং উৎপাদন বহুমূখীকরণের উপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম, কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।