জুলাই-জানুয়ারি: বিদেশি অর্থ ছাড় বেড়েছে ৩%

সাত মাসে উন্নয়ন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩০৬ শতাংশ এবং সরকারের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৫২ শতাংশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2024, 03:31 PM
Updated : 26 Feb 2024, 03:31 PM

চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে বিদেশি ঋণ ও অনুদান মিলে মোট ৪৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার ছাড় করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি।

গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৪২৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার ছাড় করেছিল দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থাগুলো। 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩০৬ শতাংশ এবং সরকারের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৫২ শতাংশ।

ইআরডির একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈশ্বিক দাতাসংস্থাগুলো মূলত দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ ও অনুদানের চুক্তি করে। সে হিসাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড়।”

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে মাত্র ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। এরপরও বৈদেশিক সহায়তার ছাড় বাড়ল কীভাবে জানতে চাইলে ইআরডির ওই কর্মকর্তা জানান, “চলতি অর্থবছরে এডিবি এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) সরকারের অনুকূলে বাজেট সহায়তার অর্থ ছাড় করায় বিদেশি মুদ্রা ছাড়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।”

ইআরডির প্রতিবেদনে দেখা যায়- অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে সবচেয়ে বেশি ১২৪ কোটি ১১ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৮ কোটি ৩৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে জাইকা। বিশ্ব ব্যাংক ছাড় করেছে ৭৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

এছাড়া রাশিয়া ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, চীন ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার এবং ভারত ১৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে।

এই সাত মাসে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে ৭১৭ কোটি ২১ লাখ ডলারের নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ১৭৬ কেটি ৫৭ লাখ ডলার। এই হিসাবে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০৬ শতাংশ বেড়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৬২ কোটি ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এডিবি। জাইকা দিয়েছে ২০২ কোটি ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি। আর বিশ্ব ব্যাংক ১৪১ কোটি ডলারের ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ঋণ পরিশোধও বেড়েছে। উন্নয়ন অংশীদারদের পুঞ্জিভূত পাওনা থেকে সুদ ও আসল বাদদে ১৮৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে ১২৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল।

ইআরডির একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে বৈশ্বিক সুদ হার সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে সুদের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অথচ এই যুদ্ধ শুরুর আগে এই সুদ হার ছিল ১ শতাংশের নিচে।