“ল অ্যান্ড অর্ডার বলতে শুধু রাস্তা-ঘাটের কথা না, এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক চালু করা, বন্দরগুলো চালু করা। এগুলি এখনই সচল করতে হবে”, বলেন তিনি।
Published : 10 Aug 2024, 06:08 PM
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুলিশ উধাও হয়ে যাওয়ার পর নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করাকেই অগ্রাধিকারের তালিকায় প্রথমে রেখেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
‘একটা ক্রান্তিলগ্নে’ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “খুব কঠিন সময়। এখন আমাদের তাৎক্ষণিক সম্পৃক্তি হল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। এটা যদি ঠিক না করতে পারি তাহলে অন্যগুলো থেমে যাবে।'
শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ল অ্যান্ড অর্ডার বলতে শুধু রাস্তা-ঘাটের কথা না, এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক চালু করা, বন্দরগুলো চালু করা। এগুলি এখনই সচল করতে হবে।”
এই কঠিন সময়ের ব্যাখ্যায় সালেহউদ্দিন বলেন, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল, অর্থনীতি যদি একেবারে থমকে যায়… মন্থর হতে পারে কোনো কারণে, কিন্তু থমকে গেলে এটা স্টার্ট করা অনেকটা গাড়ির মত, একবার বন্ধ হয়ে গেলে স্টার্ট করতে অনেক সময় লাগে, এনার্জি লাগে, ব্যাটারির উপর চাপ পড়ে।
“আমরা চাচ্ছি অর্থনীতির গতি যাতে আস্তে আস্তে সচল করতে পারি। সবাইকে উজ্জীবিত করতে পারি।”
অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সামষ্টিক খাতে মূল্যস্ফীতি আছে, এগুলো নিয়ন্ত্রণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে চেষ্টা করব।”
বাংলাদেশে সবার মধ্যে ‘অফুরন্ত কর্ম উদ্দীপনা আছে’, মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, “হয়ত নেতৃত্ব বা ব্যবস্থাপনা ঘাটতির কারণে...। সবাই মিলে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করব। সামনে এগিয়ে যাবার জন্য একটা মসৃণ পথ করে যাব।”
সরকারে খুব বেশিদিন থাকার ইচ্ছা নাই। জানিয়ে তিনি বলেন, “এসব করে পরবর্তীতে বাংলাদেশকে আরো দ্রুত পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, এজন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
বাংলাদেশে কিছু লোক ‘শুধু তোষণ করে’ মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, “কাউকে তোষণেরও দরকার নাই, প্রো-অ্যাকটিভ হবেন, সাজেশন দেবেন, আমরা সাজেশন দেব, আমাদের সাজেশনগুলো..। রিয়্যাকটিভ হলে কাজ হবে না।'
“আমরা সব করে ফেলেছি, এ রকম হলে হবে না। সবাই সহযোগিতা করলে আমরা কাজটা করে ফেলতে পারি।”
ভুল ত্রুটি হলে বললেও ‘অযথা’ ‘অযথা’ কাউকে কিছু না বলার অনুরোধও করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম পুরো চালুর কথা জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “তারপর সংস্কারের কাজ।”
সংস্কারের 'বেসিক কাজগুলো’ করতে বেশি সময় লাগবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “একটু বিচ্যুত হয়েছে, একেবারে লাইনচ্যুত হয়নি, একটু মন্থর হয়ে গেছে, এটার গতি আমরা আরও বাড়াব।”
অর্থনীতির ‘একটু ভুল ছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “উন্নয়নের যে কৌশল বা নীতির সুফল বেশির ভাগ মানুষ পায়নি। উপরের দিকে গ্রোথ বেশি হয়েছে। কিন্তু ভেতরের গ্রোথের ফল কে পেয়েছে?
“আমরা চাচ্ছি সমতাভিত্তিক, ন্যায্য, মানুষের আয় বাড়ুক, বাজারে মূল্যস্ফীতি যথাসম্ভব কমুক। মানুষের জীবন ও জীবিকার ব্যাপারে যথাসম্ভব চেষ্টা করব।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি জানান, “এটা প্রসিডিউরের ব্যাপার আছে, পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ করা বা তার বিষয়ে একা সিদ্ধান্ত নেব না। গভর্নরের পোস্ট একটা সেনসেটিভ।”
বাংলাদেশ ব্যাংক বা রুলস নর্মস আন্তর্জাতিক মানের জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা মানে নাই তাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব।”
টাকা পাচার বিষয়ক এক প্রশ্নে তিনি জানান, “সেটা আমরা জানি। সেটার প্রসেস আছে, তথ্য লাগবে। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটা করতে হবে, তা আমরা করব।”