সংস্কারে সহায়তা, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স চুক্তি, এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়, আইন শৃংখলা বাহিনী, বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞ জ্ঞান বিনিময় ত্বরান্বিত করার বিষয়ও আলোচনা হয়েছে।
Published : 13 Oct 2024, 08:11 PM
মানি লন্ডারিং ঠেকানো এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন।
ওয়াশিংটনে এই আলোচনার কথা রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতি মোকাবেলা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চুরি যাওয়া সম্পত্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক দুর্নীতি-বিরোধী ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক শেলবি স্মিথ-উইলসনের সঙ্গে ‘চমৎকার’ আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সংস্কারে সহায়তা, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স চুক্তি, এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়, আইন শৃংখলা বাহিনী, বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞ জ্ঞান বিনিময় ত্বরান্বিত করার বিষয়ও আলোচনা হয়েছে তাদের মধ্যে।
নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। সেজন্য বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করা হয়।
গত ২৮ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পুনরুদ্ধার কাজে সরকার ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা পর্ষদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ, পুলিশের সিআইডি ও দুদকের যৌথ সহায়তা নিচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, দেশে-বিদেশে পাচার ও আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ লক্ষ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত পরিমাণ কত তা নিরূপণে সরকার কাজ করছে।
"কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাত করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন, যার সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে।”
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উদ্যোগ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "এই ধরনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ইতোমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে।
"অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহেও সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে।"
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
কেবল ব্যক্তি নয়, অর্থ পাচার প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে দেশের একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) হিসাব বলছে, গত প্রায় দেড় যুগে দেশীয় ১৯টি ব্যাংকের মাত্র ২৪টি ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমেই প্রায় একশ হাজার কোটি টাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে।