আপাতত টিভি, ফ্রিজ না কেনার পরামর্শ জেফ বেজোসের

এই ধনকুবের বলছেন, ঝুঁকি যতটা সম্ভব কমিয়ে এনে নগদ অর্থ হাতে রাখতে হবে এখন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2022, 03:11 AM
Updated : 21 Nov 2022, 03:11 AM

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কালোমেঘ ঘনীভূত হওয়ায় সবাইকে সতর্ক করে ‘খরচ কমানোর’ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস।

ছোট ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের প্রতি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বেজোসের পরামর্শ, আসন্ন বড়দিনের ছুটি ঘিরে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা ও দামি পণ্য না কিনে নগদ অর্থ হাতে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

শনিবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমেরিকানদের আপাতত নতুন ব্র্যান্ডের গাড়ি, রেফ্রিজারেটরের মত দামি পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। 

বেজোস বলেন, “যদি আপনি এ মুহূর্তে একটি বড় টেলিভিশন কেনার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে হয়ত আরেকটু দেরি করা উচিত। নগদ অর্থ হাতে রাখুন, এবং দেখুন কী ঘটে। একই কথা রেফ্রিজারেটর, নতুন গাড়ি এবং এ ধরনের যা কিছু কেনার কথা ভাবছেন, সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অর্থাৎ ঝুঁকি কিছুটা কমিয়ে রাখুন।”

পাশাপাশি ছোট ব্যবসায়ীদেরও একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন ব্লুঅরিজিনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বলেছেন, নতুন যন্ত্রপাতি কেনায় বিনিয়োগ না করে বরং কিছু নগদ অর্থ এখন হাতে রাখা উচিত।

সাক্ষাৎকারে সিএনএনকে বেজোস বলেন, “যতোটুকু সম্ভব ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করা উচিত। সবচেয়ে ভালোটা হবে এই আশাটা ধরে রেখেও সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে।”

জেফ বেজোস এরইমধ্যে তার ১২৪ বিলিয়ন বা ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ সম্পদের বেশিরভাগ অংশ দাতব্য কাজে খরচ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা এবং মানব সমাজকে গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভক্তি থেকে রক্ষা করে ঐক্যবদ্ধ রাখার কাজে সহায়তা করতে এই সম্পদ খরচ করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

নিউ ইয়র্ক টাইমস গত সোমবার জানিয়েছে, অর্থনীতির গতি ক্রমশ ধীর হয়ে আসায় অ্যামাজনের বিভিন্ন শাখা থেকে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হবে। অ্যামাজনের বর্তমান প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি জেসি ওই সংখ্যাটি নিশ্চিত না করলেও জানিয়েছেন, কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়া এরইমধ্যে শুরু হয়েছে।

টুইটার, মেটা, লিফটের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এরইমধ্যে বড় সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মুনাফা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গিয়েছিল, ফলে তারা অনেক বেশি সংখ্যায় কর্মী নিয়োগ শুরু করেছিল।

কিন্তু মহামারীর প্রভাব কাটতে শুরু করার পর এ বছরের শুরু থেকে অর্থনীতির গতি ধীর হতে শুরু করে এবং তাদের আয়েও টান পড়তে থাকে। এর জেরে কর্মী নিয়োগ স্থগিত করার পর এখন ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে এসব প্রযুক্তি কোম্পানি।

অ্যামাজন জানিয়েছে, এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে তাদের নিট মুনাফা ৯ শতাংশ কমেছে এবং চতুর্থ প্রান্তিকে, অর্থাৎ আসন্ন ছুটির মৌসুমে তাদের ২ থেকে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে, যা ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশার চেয়ে কম।