দুই টাকা মূল্যমানের ৫০ কোটি ধাতব মুদ্রা (কয়েন) তৈরিতে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার।
Published : 03 Feb 2013, 10:05 AM
রোববার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড রুমে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এতে বাংলাদেশের হয়ে স্বাক্ষর করেন অর্থমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এখলাছুর রহমান। আর জাপান মিন্টের পক্ষে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইয়োশিকায়ে সিনহারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নতুন এই কয়েনে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। প্রতিটি কয়েন বানাতে খরচ পড়ছে ১ টাকা ১০ পয়সা।
চুক্তি অনুযায়ী ৭০ সপ্তাহে এসব কয়েন সরবরাহ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে প্রথম ২০ সপ্তাহে কয়েনের ডিজাইন ও নমুনা অনুমোদন হিসেবে নেয়া হয়েছে। বাকি ৫০ সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ দফায় ১০ কোটি করে কয়েন সরবরাহ করা হবে। প্রথম দফার কয়েন সরবরাহ করা হবে এপ্রিলের শেষের দিকে।
আন্তর্জাতিক নিলামে অংশ নিয়ে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, হল্যান্ড ও স্লোভাকিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার মূল্যের কয়েন তৈরির আদেশ পায় মুদ্রা তৈরির জাপানি এই সংস্থা।
২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সফল নিলামদাতাকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে এক আদেশ পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়। সর্বনিম্ন দামে ৫০ কোটি (৫০০ মিলিয়ন ইউনিট) কয়েন সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়ে নিলামটি পায় জাপান মিন্ট।
প্রতিষ্ঠানটির বিড করা মূল্য ছিল ৬৫ লাখ ইউএস ডলার বা ৫২ কোটি ইয়েন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, “এই কয়েনের প্রস্তুত প্রক্রিয়া খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে শেষ করা হয়েছে। সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তির ফলে দেশের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।”
এর আগে এই ধরনের কয়েন তৈরিতে এক টাকা ২২ পয়সা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
একই মুদ্রা জাপান মিন্টের কাছ থেকে তা পাওয়া যাচ্ছে এক টাকা ১০ পয়সায়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম, নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার, কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টেমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মুজবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে শিরো সাদোশিমা বলেন, “জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের এ বিষয়ে এটি প্রথম চুক্তি। আগামীতে জাপান মিন্ট এ বিষয়ে আরো ভূমিকা রাখতে পারবে।”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম অন্য দেশের জন্য প্রচলনযোগ্য কয়েন তৈরি করতে যাচ্ছে জাপান।
নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার জন্য কিছু স্মারক মুদ্রা তৈরি করেছিল দেশটি। এ ছাড়া কোরিয়া যুদ্ধ চলাকালে ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য বেশ কিছু ব্যাংক নোট ছেপে দিয়েছিল তারা।