‘ভয়ে নয়, সংলাপে বাড়ে কর আহরণ’

যেভাবে কর নিরীক্ষা হচ্ছে, তাতে ব্যবসায়ীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে তা দূর করতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2021, 01:32 PM
Updated : 30 Nov 2021, 02:17 PM

জাতীয় আয়কর দিবসে মঙ্গলবার এক সেমিনারে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসীম উদ্দিন ‘ট্যাক্স অডিটের’ কারণে ব্যবসার বিড়ম্বনার কথা তুলে ধরেন।

এনবিআরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ট্যাক্স অডিটে’ ব্যবসার বিড়ম্বনা দূর করতে দুই বছর আগে সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণে টাস্কফোর্স গঠন করা হলেও সেটা আর কার্যকর নেই।

“অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই বেশি কর আদায় হয়। ভয় দেখিয়ে কর আহরণ বাড়ে না।”

রাজধানীর সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবন সম্মেলনকক্ষে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসার ধরণ ও প্রকৃতি বুঝে ব্যবসায়ীদের কর সেবা দিতে এনবিআরকে পরামর্শ দেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল যুগে ব্যবসার ধরন ও প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। তাই ব্যবসায়ীদের করবান্ধব সেবা দিতে চাইলে, ব্যবসার ধরণ ও প্রকৃতি বুঝে করসেবা দিতে হবে।”

দেশের বিত্তবান, সম্পদশালী, ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের যথাযথভাবে কর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের করের টাকা দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। আপনারা যত বেশি আয়কর দেবেন, দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগ ও পরিবহন খাতের উন্নয়নে ততই ব্যয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।”

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে আলোচনায় যথাযথভাবে কর দিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি তাদের নেতা জসিমও আহ্বান জানান ।   

তিনি বলেন, দেশের সকল অঞ্চলে শিল্প স্থাপনের সুযোগ চাইলে রকারকে কর দিতে হবে। কর না পেলে সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য অবকাঠামো তৈরি করতে পারবে না।

“ব্যবসায়ীরা চায়, দেশের যেখানে যে কাঁচামাল পাওয়া যায়, সে শিল্প সেখানে স্থাপন করতে। কিন্তু অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সবাই ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক শিল্পায়ন করতে চায়।”

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যে কাঁচামাল সিলেটে পাওয়া যায়, সেই শিল্পটা সিলেটেই হওয়া উচিত। অথচ আমাদের যোগাযোগ অবকাঠামো ও জ্বালানিসহ অন্যান্য অবকাঠামো না থাকায় সিলেটে শিল্পায়ন করা যায় না।

এর আগে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআর সদস্য শামসুদ্দিন আহমেদ।

আলোচনার প্যানেলিস্ট অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, রাজস্ব আহরণ এখনো ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক।

কর আদায় ব্যাপক হারে বাড়াতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর অফিস স্থাপন করে তৃণমূল পর্যায় থেকে কর আহরণের পরামর্শ দেন তিনি।

এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, বিআরটিএ ও এনআইডির ডেটাবেইজ ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। পরে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে আয়করের আওতা সম্প্রসারণ করা হবে।