রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির হিসাবে গত অক্টোবরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে যা ছিল ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এ হিসাবে অক্টোবরের সাধারণ মূল্যস্ফীতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৭৪ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে।
সোমবার বিবিএসের ওয়েবসাইটে সর্বশেষ অক্টোবরের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমার প্রভাবেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে। কেননা এ সময়ে খাদ্য বর্হিভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
গেল অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেশ কিছুটা কমে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ হয়েছে। আগের বছরের একই মাসে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
অপরদিকে গেল অক্টোবরে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে। আগের বছরের অক্টোবরে এ হার ছিল ৫ শতাংশ।
টিসিবির হিসাবে গেল অক্টোবরে আগের বছরের একই মাসের চেয়ে চাল, ভোজ্যতেলসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বিবিএসের পরিসংখ্যানেও চালের দাম গত অর্থবছরের অক্টোবরের গড় মূল্যের তুলনায় বেশি ছিল।
বিবিএস এর গত বছর অক্টোবরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে (তিন ক্যাটাগরি) প্রতিকেজি চালের গড় মূল্য ছিল ৬১ দশমিক ৯৩ টাকা।
আর গেল অক্টোবরের প্রতিকেজি চালের গড় মূল্য ছিল ৬২ দশমিক ৫৩ টাকা। অর্থাৎ চালের দাম গত বছরের গড় মূল্যের তুলনায় বেশি ছিল।
জানতে চাইলে বিবিএস এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিবিএস শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, বরং সারা দেশের ৬৪ জেলা থেকে সব মিলে প্রায় সাড়ে ৬০০ পণ্যের মূল্য নিয়ে মূল্যস্ফীতির হিসাব করে।
“তাই কোনো পণ্যের দাম বাড়লে বা কমলে মূল্যস্ফীতি কম বেশি হবে তা নিরূপণ করা সম্ভব নয়।”
তবে এই হিসাবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে চালের মূল্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
“হয়ত আগের বছরের অক্টোবরের তুলনায় গেল অক্টোবরে চালের মূল্য কম ছিল। এ কারণে মূল্যস্ফীতি কমতে পারে,” যোগ করেন তিনি।
এ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক বিষয়ে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিবিএস এর ইনডেক্সের মধ্যে শত শত প্রডাক্ট আছে। সেটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নাই, বিতর্কও নাই।
“কিন্তু সবাই মনে করে যে সরকারের যে ইনডেক্স সেটার সঙ্গে সাধারণ মানুষ বাস্তবতার মিল পাচ্ছে না।”
“এটা এখন সাধারণ মানুষের কমন কমপ্লেইন” যোগ করেন তিনি।
বিবিএস এর সর্বশেষ মূল্যস্ফীতির হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে।
অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকা দিয়ে পাওয়া যেত সেই পণ্য বা সেবা গেল অক্টোবরে পেতে ১০৫ টাকা ৭০ পয়সা খরচ হয়েছে।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বিবিএস এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকায় গেল অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা আগে বছরের একই মাসে ছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
অপরদিকে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ।