ব্যাংকের এডি শাখায়ও বিদেশি মুদ্রায় বিল ডিসকাউন্টিংয়ের সুযোগ

অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী (এডি) শাখাগুলোও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বিদেশি মুদ্রায় রপ্তানি বিল ডিসকাউন্ট করতে পারবে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2020, 05:22 PM
Updated : 21 June 2020, 05:22 PM

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয়, এখন থেকে ব্যাংকের এডি শাখা নিজস্ব উৎস থেকে বিদেশি মুদ্রায় বিল ডিসকাউন্টিং করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের কাছে এমন উদ্বৃত্ত তহবিল থাকতে হবে, যা অন্য কোনো জায়গায় পরিশোধের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।

এই বিল ডিসকাউন্টিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালার সব ধরনের নির্দেশনা মেনে চলতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এতোদিন শুধুমাত্র অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বিল ডিসকাউন্টিং করা যেত।সম্প্রতি অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা কঠোর করায় এখন বিল ডিসকাউন্টিং প্রক্রিয়া জটিল হয়ে গেছে। সে কারণে নতুন এই সুযোগ দেওয়া হল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে যেকোনো পরিমাণের বিল ডিসকাউন্ট করা গেলেও এখন সীমা আরোপ করা হয়েছে। এতে করে রপ্তানিকারকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ রকম প্রেক্ষাপটে স্থানীয় ব্যাংকগুলোকেও বিল ডিসকাউন্টিংয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

বিল ডিসকাউন্টিং হল নির্দিষ্ট কমিশন নিয়ে রপ্তানি আদেশের বিপরীতে সৃষ্ট বিলের বিপরীতে টাকা দেওয়া। এক্ষেত্রে বিদেশি আমদানিকারকের ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে সৃষ্ট বিল স্থানীয় ব্যাংকে জমা রাখেন রপ্তানিকারক। ব্যাংক বিল নিয়ে নির্দিষ্ট কমিশনের বিপরীতে ৮০ বা ৯০ শতাংশ টাকা দেয়।

রপ্তানিমূল্য দেশে আসার পর সেখান থেকে ব্যাংক আবার বিল সমন্বয় করে নেয়। সাময়িক সময়ের জন্য রপ্তানিকারককে টাকা দেওয়ায় ব্যাংকগুলো কিছু কমিশন পায়। এই পদ্ধতিকে বিল ডিসকাউন্টিং বলা হয়।

সাধারণভাবে পণ্য জাহাজীকরণের পর ১২০ দিনের মধ্যে রপ্তানিমূল্য ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসের এ সঙ্কটের সময়ে রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনের সময় বাড়িয়ে ১৮০ দিন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নানা সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রপ্তানিকারকদের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছে। সুদের হার কমিয়ে দুই শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ঋণসীমাও বাড়ানো হয়েছে।

পণ্য জাহাজীকরণের জন্য ছয় শতাংশ সুদে ঋণ, রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনে সময় বৃদ্ধি, স্বল্প মেয়াদি ঋণের বিপরীতে আমদানির দায় পরিশোধের সময় বাড়ানোসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে কম সুদে এক লাখ চার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার।

কিস্তি না দিলেও আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি না করাসহ নানা সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।