গ্যাসের দাম বাড়ায় ‘ক্ষতিই হবে বেশি’

উচ্চ দামে আমদানি করা এলপিজিতে ভর্তুকির ভার লাঘবের জন্য সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে বলে মনে করেছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা অধিকার কর্মীরা।   

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2019, 06:42 PM
Updated : 30 June 2019, 06:42 PM

সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ এক শতাংশ বাড়বে বলে হিসাব দিয়েছে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। আর একজন অর্থনীতিবিদ বছর বছর গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিকে ‘দুর্বল পরিচালন নীতির নেতিবাচক ফল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব বলছে, সরকার গ্যাস খাতের দুর্নীতি বন্ধের ব্যবস্থা না করে সব পর্যায়ের ভোক্তার খরচের খাতা আরও ভারী করে তোলার ব্যবস্থা করেছে। ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিএনপি এবং কয়েকটি বাম দল।

গত মার্চ মাসে গণশুনানির পর রোববার সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয় বিইআরসির সংবাদ সম্মেলনে।

বিইআরসি যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে রান্নার গ্যাসের জন্য চুলাভিত্তিক গ্রাহকদের প্রতি মাসে ২৩ শতাংশ এবং মিটারভিত্তিক গ্রাহকদের ৩৮ শতাংশ বেশি অর্থ খরচ হবে। যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে যারা সিএনজি ব্যবহার করেন, তাদের খরচ বাড়বে সাড়ে ৭ শতাংশ।

পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৫ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত। এর ফলে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়বে, শিল্পোৎপাদনে খরচ বাড়বে। সব মিলিয়ে চাপ বাড়বে নিম্ন মানুষের ওপর।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বিভিন্ন খাতে গ্যাস রেশনিং নিশ্চিত করতে গিয়ে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হয়তো যৌক্তিক। কিন্তু ‘স্বল্পকালীন চিন্তা ও পরিকল্পনার’ ওপর ভিত্তি করে এই হারে দাম বৃদ্ধি শিল্প-বাণিজ্য এবং ভোক্তা পর্যায়ে ‘নেতিবাচক প্রভাবই বেশি’ ফেলবে।

“এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। যাতে গ্রাহকরা তাদের ব্যয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা করে নিতে পারে। এখন যে হারে দাম বাড়ানো হয়েছে- তার সুদূর প্রসারী প্রভাব নিয়ে পর্যাপ্ত হোম ওয়ার্ক করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া আরও ট্রান্সপারেন্ট হওয়া উচিত।”

গ্যাসের দাম এই হারে বাড়লে পোশাকের উৎপাদন খরচ এক শতাংশ বাড়বে- এমন তথ্য দিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, “শতকরা হারের বিচারে এটা অনেক বড় অংক বলে হয়ত মনে হয় না। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে সংগ্রাম করে টিকে থাকা একটি শিল্পের জন্য এটি আরেকটি আঘাত।”

রুবানা অভিযোগ করেন, সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও কারখানায় গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি।

“কারখানাগুলো এখনও গ্যাসের চাপ ওঠানামার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পোশাকের মূল্য নিয়ে উদ্যোক্তারা সব সময় একটি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে থাকছেন। বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না।

“এর মধ্যে নতুন করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনাকে আরও সংকুচিত করবে। এ ধরনের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়াবে, ব্যবসাকে আরও কঠিন করে দেবে।”

গ্যাসের দাম বাড়ল যে হারে

খাত

বর্তমান দাম

১ জুলাই থেকে

বাড়লো

গৃহস্থালি

মিটারভিত্তিক (প্রতি ঘনমিটার)

৯ টাকা ১০ পয়সা

১২ টাকা ৬০ পয়সা

৩৮%

এক বার্নার (প্রতি মাসে)

৭৫০ টাকা

৯২৫ টাকা

২৩%

দুই বার্নার (প্রতি মাসে)

৮০০ টাকা

৯৭৫ টাকা

২২%

যানবাহন

সিএনজি (প্রতি ঘনমিটার)

৪০ টাকা

৪৩ টাকা

৭.৫%

বাণিজ্যিক

হোটেল রেস্তোরাঁ

১৭ টাকা ০৪ পয়সা

২৩ টাকা

৩৫%

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প

১৭ টাকা ০৪ পয়সা

১৭ টাকা ০৪ পয়সা

অপরিবর্তিত

অন্য খাতে (প্রতি ঘনমিটার)

বিদ্যুৎ

৩ টাকা ১৬ পয়সা

৪ টাকা ৪৫ পয়সা

৪১%

ক্যাপটিভ পাওয়ার

৯ টাকা ৬২ পয়সা

১৩ টাকা ৮৫ পয়সা

৪৪%

সার

২ টাকা ৭১ পয়সা

৪ টাকা ৪৫ পয়সা

৬৫%

শিল্প

৭ টাকা ৭৬ পয়সা

১০ টাকা ৭০ পয়সা

৩৮%

চা বাগান

৭ টাকা ৪২ পয়সা

১০ টাকা ৭০ পয়সা

৪৪%

এর আগে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়িয়েছিল সরকার। ২০১৮ সালের জুনে গ্যাসের দাম বাড়াতে আবারও বিইআরসির দ্বারস্ত হয়েছিল বিতরণ সংস্থাগুলো। তবে সেবার দাম বাড়ায়নি বিইআরসি। 

বিতরণ সংস্থাগুলো এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল আমদানি করা এলএনজিতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও গ্যাসে ভর্তুকির তথ্য তুলে ধরে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

রোববার সেই প্রস্তাবে সায় দেওয়ার পর বিইআরসির সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন ৬৫০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট (এমএমসিএফডি) এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। জুলাই মাস থেকে তা বেড়ে ৮৫০ এমএমসিএফডি হবে ধরে নিয়ে এই হারে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে দেশে উত্তেলিত গ্যাসের গড় মূল্য দাঁড়াচ্ছে প্রতি ঘনমিটার ৫ টাকা এবং আমদানি করা এলএনজির ক্ষেত্রে ৩৫ টাকা।

মিজানুর বলেন, জুলাই থেকে সরবরাহ লাইনে ২৫০০ এমএমসিএফডি প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ৮৫০ এমএমসিএফডি এলএনজি সঞ্চালন হবে বলে ধরা হয়েছে। তাতে প্রতি ঘনমিটারের খরচ বেড়ে গড়ে ১২ টাকা ৬০ পয়সা হবে। কিন্তু সরকার নেবে ৯ টাকা করে। বাকি টাকা বিভিন্ন খাত থেকে ভর্তুকি হিসেবে আসবে।

আগামী অর্থবছরে এলএনজির জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে জানিয়ে বিইআরসির এই সদস্য বলেন, এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে পাওয়া যাবে ৩৩ শতাংশ বা ৮ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। সরকারি কোষাগার থেকে আসবে ২৯ শতাংশ বা ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে বাকি ২ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

ফাইল ছবি

কিন্তু কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলছেন, দুর্নীতির কারণে গ্যাস উন্নয়ন ও গ্যাস নিরাপত্তা তহবিল বিলুপ্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা। গণশুনানিতে দেওয়া তাদের ওই প্রস্তাব গ্রহণ করলে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি বেঁচে যেত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “১০ শতাংশ গ্যাস চুরি হয়ে যায়। গ্যাস খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করতে আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এ চুরি রোধ করার পদক্ষেপ নিলে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা সমন্বয় হত। তা না করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত বিইআরসি দিল, তাতে ভোক্তার অধিকারই খর্ব হল।”

বিইআরসির ওই সিদ্ধান্তকে ‘আইনবিরোধী’ আখ্যায়িত করে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “বিতরণ কোম্পানিগুলোর লাভের ভিত্তি ধরে মূল্যহার নির্ধারণ হতে পারে না। অথচ কোম্পানিগুলোরকে লাভে রাখার ধারাবাহিকতায় মূল্যহার নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আমরা বলছি, বিচারিক (বিবেচ্য) বিষয়গুলো আমলে না নিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।”

সব সংযোগে প্রিপেইড মিটার বসাতে ২০১৫ সালে যে আদেশ বিইআরসি দিয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, প্রিপেইড মিটার না লাগানো পর্যন্ত ভোক্তার স্বার্থে বিতরণ চার্জ স্থগিত রাখা উচিৎ।  

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সার্বিকভাবে গ্যাসের দাম যে হারে বাড়ানো হল, তা সীমিত আয়ের মানুষের জন্য ‘অনেক কষ্টের’ কারণ হবে।

“গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ করতে ক্যাব হাই কোর্টে গিয়েছিল। সেখানে বিচারক কিছু অভজারভেশন দিয়েছিলেন। দুর্নীতি অপচয় বন্ধ করতে বলেছিলেন। বিইআরসির উচিত ছিল বিষয়গুলো অ্যাড্রেস করা। অব্যবস্থাপনা কমে গেলে গ্যাসের দাম কমে যাবে। জনগণ উপকৃত হবে, সরকারেরও সুনাম হবে।”

ক্যাবের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি মিললো ভোক্তাদের কথাতেও। রাজধানীর কাজীপাড়ার বাসিন্দা তাহমিনা ইয়াছমিন শিল্পীর ভাষায়- দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জন্য ‘অবশ্যই একটা খারাপ খবর’।

“গ্যাসের দাম বাড়লে জীবনযাত্রার খরচের খাত বড় হয়, বাসা ভাড়া বাড়ে। প্রতি বছরই গ্যাসের দাম বাড়ছে। আমাদের মত মানুষের জন্য এটা আসলেই কষ্টের।”

বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্শন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর বলেন, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার ফিড গ্যাসের দাম ৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে খুচরা দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা করা হয়েছে। তাতে ফিলিং স্টেশনের মালিকের লাভের মার্জিন অপরিবর্তিত থাকছে। খরচ বাড়ছে পরিবহন মালিক আর যাত্রীদের।

ফাইল ছবি

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গণবিরোধী এ সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাম দল সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিপিবি সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্যাসের দাম যদি বাড়ানো হয়, আমরা আগেই বলেছিলাম বাংলাদেশ অচল হয়ে যাবে। আগামীকাল আমরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করব, সেই সমাবেশেই কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাসদ।

দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজেট ঘোষণার পরপর এভাবে গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার জনগণের পকেট কাটার আরেকটা ব্যবস্থা করল। কিছু লোকের স্বার্থে এই মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

বিইআরসির গণশুনানিতে যথেষ্ট যুক্তি বা তথ্য-উপাত্ত না এলেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে অভিযোগ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধা দিতে স্বেচ্ছাচারী পন্থায় এই মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। এর ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাকাল জনগণের দুর্ভোগ-দুর্গতি আরো বৃদ্ধি পাবে।”

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এই মূল্য বৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এভাবে মূল্য বৃদ্ধি করা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক। আমি পার্লামেন্টে এ নিয়ে আলোচনার দাবি করেছি।”