অর্থবছরের ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এই অঙ্ক ৫ দশমিক ৫ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য ছিল সরকারের। আগের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া মূল্যস্ফীতির তথ্য মঙ্গলবার একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেন প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে মূল্যস্ফীতি রাখতে না পারার জন্য অর্থবছরের শুরুতে আকস্মিক বন্যায় হাওরে ফসলহানির পর চালের দরের ঊর্ধ্বগতিকে কারণ দেখান তিনি।
মুস্তফা কামাল বলেন, “অর্থবছরের শুরুতে হাওর এলাকায় হঠাৎ বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এরপরে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। যদিও সরকার চাল আমদানির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।”
অর্থবছরের শেষ ছয় মাসে মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সারা অর্থবছর জুড়ে চিনি, ভোজ্যতেলের দাম কম ছিল। এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকার মজুদও পর্যাপ্ত করেছে।”
“এমনকি মজুদ আগামী দুই বছরের জন্য পর্যাপ্ত হবে। বেসরকারি খাত যদি পণ্যের দাম বাড়ায়, সে ক্ষেত্রে সরকার নিজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে,” আশা দেখান মন্ত্রী।
বিবিএসের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী অর্থবছরের শেষ জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও ঈদের বাজারের প্রভাবে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। মে মাসে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
জুনে খাদ্য মুল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জুনে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, এর আগের মাসে যা ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
বিবিএসের জুন মাসের ভোক্তা মূল্য সূচক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্য পণ্যের মধ্যে মাছ-মাংস, শাক-সবজি, মসলা ও ফল জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মধ্যে পোশাক, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, সেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণসহ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছে।
মে মাসে গ্রামীণ এলাকায়ও মূল্যস্ফীতি অপরিবর্তিত ছিল। মে মাসের মতোই জুনেও গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয় ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
জুন মাসে গ্রামে খাদ্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয় ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, মে মাসে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, মে মাসে যা ছিল ৪ দমমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে শহর এলাকায় জুন মাসে মূল্যস্ফীতির হারও কমেছে।
মে মাসে শহরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ ছিল, যা জুন মাসে হয় ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। খাদ্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয় ৫ দশকি শুন্য ৩ শতাংশ।
মে মাসে শহরে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ।