চালের দাম ৪০ টাকার মধ্যে আনার চেষ্টা হচ্ছে: মুহিত

চালের দাম কমিয়ে কেজিপ্রতি ৪০ টাকার মধ্যে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2017, 09:28 AM
Updated : 30 Nov 2017, 03:45 PM

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “শেষ ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে শুধু এই বছরেই আমরা খাদ্য সমস্যায় পড়েছি। অসময়ের বন্যার কারণে এবার ফসলের ক্ষতি হয়েছে, চালের দাম বেড়ে গেছে। আমরা এটাকে কমিয়ে ৪০ টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছি।”

আগাম বন্যায় হাওরে ফসলহানির পর এপ্রিল-মে থেকে চালের দাম বাড়তে শুরু করে। সেপ্টেম্বরে কোরবানির ঈদের পর কয়েক দিনে চালের দাম বাড়ে অস্বাভাবিকভাবে। সরু চালের দাম খুচরায় কেজিপ্রতি ৭০ টাকা পর্যন্ত ওঠে, সমানতালে বাড়তে থাকে মোটা চালের দামও।

এই প্রেক্ষাপটে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে চালকল মালিক, আমদানিকারক, আড়ৎদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী বৈঠক হয়। এতে সরকার ব্যবসায়ীদের কয়েকটি দাবি মেনে নিলে মিল মালিকরা চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমানোর ঘোষণা দেন।

পাশাপাশি চাল আমদানির শর্ত শিথিল হওয়ায় ভারত, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া থেকে চাল আমদানিও শুরু হয়। এতে মোটা চালের দাম কিছুটা কমে এলেও চিকন চালের দামে এখন পর্যন্ত তেমন একটা হেরফের হয়নি।

চালের দাম কমানোর বিষয়টিকে সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, “ইতোমধ্যে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো চালের দাম কমাচ্ছে। আমরা বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছি।”

‘অ্যাচিভিং এসজিডিস: এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ) আয়োজিত পলিসি ডায়ালগে মন্ত্রী বলেন, “এক দশক ধরে আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশে রয়েছে। আর শেষ তিন বছরে আমরা ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।

“২০০৯ সলে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার সময় আমরা অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে চাঙা করার নীতি গ্রহণ করি, যাতে বাজারে পণ্য সরবরাহ কমে না যায়। এ নীতি অবলম্বন করে আমরা দারুণ সফলতা পেয়েছি।”

মুহিত বলেন, “বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যসীমায় রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন করা আমাদের প্রধান পলিসি। শেষ আট বছরে আর প্রতিবছরই এক শতাংশ করে কমিয়েছি। আমার ধারণা, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারব।”

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯৭৮ সাল থেকে ৩২টি প্রকল্পে বাংলাদেশে ইফাদ সরাসরি ৭১ কোটি ৭২ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর উপকার ভোগ করেছে ১ কোটি ৭ লাখ পরিবার।

বর্তমানে ইফাদ বাস্তবায়নাধীন ছয়টি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি, বাজার ও অর্থ প্রবাহে অভিগম্যতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় জীবিকার সন্ধানে সহযোগিতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রকল্পগুলোর কাজ এগোচ্ছে।

বিনিয়োগে ইফাদের সহযোগীদের মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, নেদারল্যান্ডস সরকার, স্পেন সরকার, জার্মানির কেএফডব্লিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, কোরিয়া, নোরাড, ড্যানিডা, ইউএসএইড এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও দেশি এনজিও রয়েছে।