২০২৪ সালে তৃতীয় টার্মিনাল পুরোদমে চালু হবে বলে জানালেন বেবিচক চেয়ারম্যান।
Published : 27 Jun 2023, 09:07 PM
বাংলাদেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল আগামী অক্টোবরে পুরোদমে চালু হচ্ছে না।
নতুন টার্মিনালটি পুরোদমে চালু হতে ২০২৪ সাল নাগাদ সময় লাগলেও অক্টোবরে স্বল্প পরিসরে তা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
তিনি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিংয়ের। এজন্য প্রকল্প এলাকায় দিন-রাত কাজ চলছে। অক্টোবর মাসে সফট উদ্বোধন হলেও এই টার্মিনাল পুরোপুরি ফাংশনাল হবে ২০২৪ সালে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি।
শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩০টি এয়ারলাইন্সের ১২০ থেকে ১৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এসব ফ্লাইটের ১৯ থেকে ২১ হাজার যাত্রী প্রতিদিন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। হজ বা বিশেষ সময়ে যাত্রীর চাপ আরও বেড়ে যায়।
এই যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে বিমানবন্দরের বর্তমানে চালু থাকা দুটি টার্মিনাল যথেষ্ট নয় বলে কর্মকর্তাদের ভাষ্য। যে কারণে আরেকটি টার্মিনাল করা হচ্ছে বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে।
২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে কাজ পরিদর্শনে গিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছিলেন, এ বছরের অক্টোবরেই তৃতীয় টার্মিনাল চালু হচ্ছে।
অক্টোবরে চালু হচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল: প্রতিমন্ত্রী
মঙ্গলবার প্রকল্প এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে আমরা চলে এসেছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে এই প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে।
“আপনারা জানেন, আজ থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদেরে এখানে ৩/৪ হাজার শ্রমিক ছুটিতেও কাজ করছে। তারা শুধু ঈদের দিন কাজ করবেন না। এর পরের দিন থেকে তারা আবার কাজ শুরু করবেন।”
এই প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং, রাস্তা, কার পার্কিং, কার্গো কমপ্লেক্স, পার্কিং অ্যাপ্রোনসহ আরও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে।
মফিদুর জানান, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যে আরও ১২ শতাংশের মতো কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন।
“আমরা একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিমানবন্দর এখানে তৈরি করতে যাচ্ছি। এখানে ব্যবস্থাপনা থাকবে আন্তর্জাতিক মানের।”
বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং তিনি বলেন, “এখন গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বিশ্বের অন্যান্য দেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে একাধিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার থাকে। এতে এয়ারলাইনসগুলো তাদের পছন্দমতো গ্রাউন্ড হ্যান্ডলারের কাছ থেকে সেবা নিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও একাধিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার থাকলে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।”
বেবিচকের চেয়ারম্যান জানান, তৃতীয় টার্মিনালের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণসহ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের কাজটি জাপানকে দিয়ে করাতে চাইছে সরকার, যে দেশটি এই প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে।
“সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে তারা কোন কোন টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনে কাজটা করবে, এই লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের একটি সমীক্ষা চলছে। আমরা কী ধরনের সার্ভিস চাই, সার্ভিসের অ্যাগেইনেস্টে কী ধরনের ফাইন্যান্সিয়াল কস্ট আসবে, সব কিছু এই স্টাডিতে থাকবে। যদি তখন আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র এই শর্তগুলো মানতে রাজি হয়, তাহলে তারা আমাদের এই সার্ভিসটা প্রদান করবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেকসহ তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসংক্রান্ত প্রকল্পের কর্মকর্তা, জাইকার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।