অনেক আমলা রাজনৈতিক অভিলাষের কারণে বিভিন্ন অনিয়মের কাজে জড়িত ছিলেন বলেও সরকারি কর্মকর্তারা তুলে ধরেছেন, বলেন দেবপ্রিয়।
Published : 03 Nov 2024, 07:38 PM
আগের সরকারের আমলে প্রশাসন ‘সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিকভাবে জিম্মি’ ছিল বলে অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সামনে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আমলারা।
রোববার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বৈঠকে ৩২ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ৮৫ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশ নেন।
দেবপ্রিয় বলেন, “উনারা (সরকারি কর্মকর্তারা) বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিকভাবে জিম্মি অবস্থার মধ্যে ছিল। এ কথাটাই উনারা বলেছেন।
“তবে কেউ কেউ বলেছেন, এর ভেতরেও কেউ কেউ সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। যারা দাঁড়িয়েছেন তারা সেক্ষেত্রে কিন্তু ব্যত্যয় করতে পেরেছেন। একেবারেই যে তারা পারেননি তা না।”
তবে সাহস করে দাঁড়াতে গিয়ে কেউ কেউ ‘পেশাগত ক্ষতি’র সম্মুখীন হয়েছেন বলেও বৈঠকে তারা তুলে ধরেছেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় বলেন, “কেউ কেউ বলেছেন, এতে পেশাজীবনের অনুগমন বা অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।”
তার ভ্যাষ্য, কর্মকর্তারা বলেছেন, জবাবদিহির অভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দুর্বলতা ছিল। উন্নয়ন প্রশাসনের মধ্যে কিছু অসাধু কর্মকর্তা, রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়ীদের প্রভাব ছিল। অনেক আমলা রাজনৈতিক অভিলাষের কারণে এই ধরনের কাজে জড়িত ছিলেন বলেও তারা তুলে ধরেছেন।
“তারা জানিয়েছেন পেশাগতভাবে আমাদের ভঙ্গুর করে ফেলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্নভাবে বদলি করে ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে তারা পেশাদারি ও দলগতভাবে কাজ করতে পারেননি। এই কারণে প্রকল্প অনিয়ম হয়েছে।”
ব্ঠৈকে সরকারি কর্মকর্তাদের তুলে ধরা অভিজ্ঞতার বিষয়ে দেবপ্রিয় বলেন, “উনাদের ওপর প্রবীণরা (সিনিয়র ও সাবেক আমলারা) চাপ সৃষ্টি করেছেন বলে শ্বেতপত্র কমিটির সামনে বর্তমান দায়িত্বশীলরা তুলে ধরেন।“
বৈঠকে হাইটেক পার্ক, কর্ণফুলী টানেল, জ্বালানি খাত, কর আহরণ, সামাজিক খাত, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তার ভাষ্য, “আলোচনায় উঠে এসেছে পেশাদারি উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা খুবই দরকার। সক্ষম, স্বাধীন এবং যোগ্য পেশাজীবীদের উন্নয়নের জন্য ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে যাতে কোনো বাঁধার সৃষ্টি না হয় বলেও তারা উল্লেখ করেছেন।”