দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণ ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ায়’ ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।
Published : 16 Jan 2024, 12:58 PM
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্সকেই দেশের অর্থনীতির ‘মূল চালিকা শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়তে প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, "স্বাধীনতা, সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রাখেন। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের বিরাট অবদান রয়েছে। সেটা ছাড়াও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।“
মঙ্গলবার গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, "যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয়, আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন সংগ্রাম করেন। জনমত সৃষ্টি করেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।"
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণ ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ায়’ ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “বিএনপি যখন নির্বাচনে আসবে না, কেউ যাতে নির্বাচনে না আসে, কেউ যেন ভোট না দেয় এর জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করল, এই লিফলেট বিতরণের পরে ঘটনা উল্টো হয়ে গেল, মানুষজন আরও উৎসাহিত হল যে ‘আমাদের ভোট দিতেই হবে’।
"এবং সেই ক্ষেত্রে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, কোনো রকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, একটা অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়, সেই প্রচেষ্টাই আমাদের ছিল। যার কারণে একের পর এক নির্বাচনের সংস্কার আমরা নিয়ে আসি। কারণ সেনা শাসকরা যখন একের পর এক ক্ষমতা দখল করে তখন তারা নির্বাচনে ভোট কারচুপি করাটা শুরু করেছিল। সেই জায়গা থেকে মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া, সেই আন্দোলন সংগ্রামটাই আমরা করেছি।"
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পর জনগণ এ সরকারকে ‘সেবক হিসেবে পেয়েছে’ বলে শেখ হাসিনার ভাষ্য।
তিনি বলেন, “সেই ঘোষণাটা জাতির পিতা দিয়েছিলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে, মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করব, যেন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।"
বাংলাদেশ যে কোনো পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের পাশে আছে জানিয়ে সরকারের পররাষ্ট্র নীতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করা, নারীদের ধ্বংস করা, এটা এক ধরনের গণহত্যা। আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি, আগামীতেও পাঠাব। এর পরে আবার ইয়মেনে আক্রমণ। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। মিয়ানমার যখন অশান্ত হল, তারা আশ্রয় চাইল আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, আমরা যুদ্ধে যাইনি। কারণ আমরা শান্তি চেয়েছি।“
অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে আমি যেখানেই গেছি, সেখানেই বলেছি, এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে ওই টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা-শিক্ষায় ব্যয় হোক। আমরা এর (অস্ত্র বাণিজ্য) ঘোর বিরোধিতা করি, আমরা কখনো যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই।"
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তালা দেওয়া এবং খোলা প্রসঙ্গেও কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, "বিএনপি অফিসে তারাই তালা দেয়, তারাই ভাঙে, তারা বলে চাবি হারিয়েছে, চাবি খোগায়া, তাদের চাবি খোগায়া। চাবিটা গেল কোথায়? তারাইতো তালা দিয়েছে, তাদের চাবি হারাবে তারাও পথ হারাবে।“
বিএনপিকে ‘পথ হারানো পথিক’ আখ্যা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “জানিনা তাদের সাংগঠনিক কোনো যোগ্যতা আছে কি না। একটাই আছে, আগুন দেওয়া।“