নয় মাসে এসেছে দুই হাজার ১৭৮ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
Published : 06 Apr 2025, 08:30 PM
চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা এক মাসের হিসাবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।
২০২৪ সালের মার্চে রেমিটেন্স আসে ১৯৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে এবার প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স এসেছে।
আরিফ হোসেন খান বলেন, “চলতি বছর মার্চে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ৬৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ ছাড়া দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে; ২৬৪ কোটি ডলার।
আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আসে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে; ২৫৩ কোটি ডলার।
চলতি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স আসার তথ্য আগেই দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। মার্চের প্রথম ২৬ দিনেই ২৯৪ কোটি ডলার দেশে এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে রেমিটেন্স এসেছে দুই হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের। আর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত এসেছে এক হাজার ৭০৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ সময়ে রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের আগে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই মার্চ মাসে বেশি রেমিটেন্স এসেছে। গত ১০ বছরের ডেটা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ঈদের আগেই বেশি রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসীরা। ”
রেমিটেন্স বাড়ার পেছনে আরো দুটি বড় কারণ দেখছেন পূবালী ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ডলারের দামে এক রকম স্থিতিশীলতা এসেছে। ডলার দর স্থিতিশীল থাকলে সেখানে আস্থা তৈরি হয়।
“আর রাজনৈতিক পটপরিবর্তের পর অনেকে জেলে গিয়েছেন। তাতে হুন্ডি মার্কেট এখন আগের মত নেই। হুন্ডিতে রেমিটেন্স পাঠানোর চাহিদা কমেছে। তাই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স এসেছে বেশি।”
চলতি বছর জানুয়ারির শেষ দিকে ডলারের দর বাড়তে বাড়তে ১২৮ টাকায় উঠে যায়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলো ১২৬ দরেও রেমিটেন্স কেনে বলে সংবাদমাধ্যমে আসে।
এমন প্রেক্ষাপটে জানুয়ারির শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্সের দর সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ঠিক করে দেয়। তবে ব্যাংকগুলোর জন্য এক টাকা পর্যন্ত বেশি দাম দিয়ে ডলার কেনাবেচার সুযোগ রাখা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে ওই সময় রেমিটেন্স ও রপ্তানিতে সব ব্যাংককে একই দর দেওয়ার মৌখিক নির্দেশ দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
এছাড়া ডলার কেনাবেচায় সর্বোচ্চ ব্যবধান (স্প্রেড) এক টাকা রাখার কথাও বলেন তিনি। নির্দেশনা না মানলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করার কথাও বলা হয় তখন।