শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দেয়ায় প্রথমবারের মত গত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশেষ ব্যবস্থায় অর্থ ধার দেওয়া শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Published : 25 Mar 2024, 10:17 PM
বিশেষ ব্যবস্থায় শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ধার হিসেবে নেওয়া তারল্য সহায়তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ দিন করল বাংলাদেশ ব্যাংক, আগে যা ছিল সর্বোচ্চ ১৪ দিন।
সেই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক বা ইসলামি ব্যাংকের পাশাপাশি প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামিক শাখাগুলোও এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তা পাবে।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হিসেবে সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, “শরিয়াহ্ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সুষ্ঠু তারল্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এবং ইসলামিক আর্থিক ব্যবস্থাকে অধিকতর শক্তিশালী করা।”
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দেয়ায় প্রথমবারের মত গত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশেষ ব্যবস্থায় অর্থ ধার দেওয়া শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন ‘ইসলামিক ব্যাংকস লিক্যুইডিটি ফ্যাসিলিটি (আইবিএলএফ)’ নীতিমালা করা হয়।
নীতিমালা জারির ১৬ মাস পরে ধার দেওয়ার পরিধি বাড়ল।
আগের নির্দেশনার দুটিতে সংশোধনী দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানিয়েছে, আইবিএলএফ এর আওতায় পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের পাশাপাশি প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামিক শাখা বা উইন্ডো তারল্য সহায়তা নিতে পারবে।
নতুন নির্দেশনায়, ৭, ১২ ও ২৮ দিনের জন্য ধার নেওয়ার সুযোগ করা হয়, আগে শুধু ১৪ দিন মেয়াদের জন্য অর্থ নেওয়ার সুযোগ ছিল।
নতুন নির্দেশনায় মুনাফার হার নির্ধারণে বলা হয়, “প্রাথমিকভাবে ধার নেওয়া অর্থের মুনাফার হার হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঘোষিত মাসিক আমানতের উপর মুনাফার হার। কোনো ব্যাংকের মাসিক মুনাফার হার না থাকলে পরবর্তী কোনো আমানত প্যাকেজের মুনাফার হারকে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
আগে তিন মাসের জন্য ‘মুদারাবা মেয়াদি আমানতের’ বিপরীতে ঘোষিত মুনাফার হারকে বিবেচনায় নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বার্ষিক মুনাফা ঘোষণা করার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমন্বয় করে চূড়ান্ত মুনাফা নির্ধারণ করবে। নতুন দেওয়া সুযোগ নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখার একটি চলতি বা আল ওয়াদিয়া হিসাব থাকতে হবে।
আইবিএলএফ নীতিমালা জারির পূর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে শুধু প্রচলিত ব্যবস্থার ব্যাংকগুলো তারল্যের সুবিধা নিতে পারত। রেপো, বিশেষ রেপো ও লিক্যুইডিটি সাপোর্ট ফ্যাসিলিটিজ সুবিধার (এলএসএফ) মাধ্যমে ব্যাংকগুলো অর্থ ধার নিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে।
ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য তারল্য সহায়তা দেওয়ার বা ব্যাংকগুলোর নেওয়ার সুযোগ ছিল। ধার নিতে ব্যাংকগুলোর ‘বাংলাদেশ সরকারের ইসলামিক সুকুক বন্ডে (বিজিআইএস)’ বিনিয়োগ থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, কমপক্ষে এক কোটি টাকা নিতে আবেদন করতে হবে। অর্থ পেতে সুকুক বন্ডকে জামানত হিসেবে রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে দশটি পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিকের পাশাপাশি ৩১টি ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডো বা ইসলামিক শাখা রয়েছে।
সব মিলিয়ে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং শাখা সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৩২৩টি, যেখানে প্রচলিত ব্যাংকের শাখা সংখ্যা ১১ হাজার ২৮৩টি।