এনবিআরকে দুই ভাগ করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আলাদা করতে খসড়া অধ্যাদেশে গত ১৭ এপ্রিল অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
Published : 27 Apr 2025, 11:47 PM
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে দুইভাগ করার ক্ষেত্রে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারদের দুই সংগঠন যে মতামত তুলে ধরেছিলেন অধ্যাদেশের খসড়ায় সেটির ‘প্রতিফলন মেলেনি’ বলে দাবি করেছে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন।
বর্তমানে রাজস্ব আহরণ ও নীতি প্রণয়নসহ রাজস্ব সংক্রান্ত বেশির ভাগ দায়িত্বে রয়েছেন এ দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
এনবিআরকে দুই ভাগ করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আলাদা করতে খসড়া অধ্যাদেশে গত ১৭ এপ্রিল অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। বাকি প্রক্রিয়া শেষ করে তা দ্রুত জারি হওয়ার কথা বলছে সরকার।
রোববার এনবিআরের মাল্টিপারপাস হলে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) করে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন।
সভা শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, “গত উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর যে খসড়া পাওয়া গেছে সেটি পাঠ ও পর্যালোচনা করে দুই সংগঠনের মতামত প্রতিফলিত হয়নি বলে প্রতীয়মান হয়েছে।”
এছাড়া রাজস্ব আহরণ, নীতি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকা বা কম অভিজ্ঞদের কাছে রাজস্ব নীতি বিভাগ চলে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়, বিশেষ কোনো মহলের প্ররোচনায় অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের জন-আকাঙ্ক্ষা বিরোধী এবং সংস্কারের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থি কোনো উদ্যোগ কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির প্রতিবন্ধক হতে পারে।
বর্তমানে কর রাজস্ব আদায় করে থাকে এনবিআর; যেখানে চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনিক কিছু পদ (যেখানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা আছেন) ছাড়া সকল দায়িত্ব পালন করে আসছে আয়কর এবং শুল্ক ক্যাডাররা।
তবে উন্নয়ন সহযোগীদের চাপ, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও আহরণের জন্য পৃথক সংস্থার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলে এটি আলোর মুখ দেখে।
এ বিষয়ে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডাররাও ঐক্যমত্য থাকলেও রাজস্ব আদায় বাড়ানো ও কর-জিডিপির অনুপাত বাড়াতে এর নেতৃত্ব তাদের কাছেই থাকার মত দিয়ে আসছেন তারা। তাদের দাবিসহ স্মারকলিপিও দেওয়া হয় অর্থ উপদেষ্টার কাছে।
এ দুই সংগঠনের তরফে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্য হতে' রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব নিয়োগের মতামত প্রদান করা হলেও খসড়ায় ‘উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো সরকারি কর্মকর্তাকে' রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব করার বিধান রাখা হয়েছে বলে তুলে ধরেছে অ্যাসোসিয়েশন।
এর ফলে এই দুই ক্যাডারের ‘কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যক্ষভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি’ বলে দাবি করা হয় তাদের তরফে।