চট্টগ্রামে আগামী মৌসুম থেকে ‘জলাবদ্ধতা’ থাকবে না: তথ্যমন্ত্রী

জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় সোয়া বিলিয়িন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী মৌসুমেই এ সঙ্কট কেটে যাবে।

শনিবার দুপুরে নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া মৌসুমী আবাসিকের আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা-নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জলাবদ্ধতা নিরসনে সবাইকে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছেন।

“এত বরাদ্দ ঢাকা শহরের জন্যও দেওয়া হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ চলছে, আশা করি আগামী মৌসুমে আগের মত জলাবদ্ধতা আর হবে না।”

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম শহরে পৌনে এক কোটি মানুষ। আমরা পৌনে এক কোটি মানুষ সবাই মিলে যদি ময়লা করি, সিটি করপোরেশনের চার হাজার কর্মীর পক্ষে পরিষ্কার রাখা কোনোদিন সম্ভব না।

“সুতরাং আমাদের নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে রাস্তাঘাট নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখা। ড্রেন করার পর সেই ড্রেনে যদি আমরা পলিথিন ও বাসা বাড়ির ময়লা ফেলি তাহলে সেই ড্রেন কখনও সচল থাকে না। এটা চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে সব জায়গায় হচ্ছে।”

বিদেশের উদাহরণ টেনে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “সিঙ্গাপুর, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু শহর আছে যেখানে থুথু ফেললে জরিমানা দিতে হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে গিয়েছি, কোনো দেশে আমাদের মত যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার এই অবস্থা নেই।

“কিন্তু আমরা যখন বিদেশে যাই তখন কিন্তু যেখানে সেখানে ময়লা ফেলি না। এই অভ্যাস থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে।”

‘কলঙ্কজনক সব ঘটনা বিএনপির’

এদিন সাংবিদকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে যত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে সবকিছুই বিএনপি ঘটিয়েছে। তারা প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল ইতোপূর্বে। এবার তারা সুপ্রিম কোর্টের ব্যালট ছিনতাই করেছে নির্বাচনী কার্যক্রমকে ভণ্ডুল করার জন্য।

“নির্বাচনী কার্যক্রমের জন্য প্যান্ডেলসহ যে সমস্ত স্থাপনা করা হয়েছিল সেগুলো ভাঙচুর করেছে। যেভাবে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা- ঠিক সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি। এটার জন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।”

এ সময় সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে জয়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকায় তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার ব্যাপক হাঙ্গামা, হট্টগোল, পুলিশের পিটুনির মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলে। এ নিয়ে দুদিন ভোট কারচুপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

আওয়ামী লীগের এ সম্পাদক বলেন, “আপনারা জানেন ঢাকা বারের নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেছিল। সেখানে তারা শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছে। সেজন্য তারা প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, এরপর তারা ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে এবং নির্বাচনী পরিচালনা করার স্থাপনাগুলো ভাংচুর করেছে।”

‘বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত, আওয়ামী লীগের পতন দ্রুত’ মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, “২০০৯ সালে সরকার গঠনের এক মাস পর থেকেই বিএনপি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, আর সরকারকে টেনে নামাতে বহুবার চেষ্টা করে বিএনপিই জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, তারাই দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গেছে।

“মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক। এগুলোতে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে।”

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটির মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী উপস্থিত ছিলেন।