র্যাব কর্মকর্তা মাহবুবের ভাষ্য, দুইটি ট্রলার নিয়ে তারা সাগরে ‘গণডাকাতি’ করতে যাচ্ছিলেন। ট্রলার দুইটি থেকে বেশকিছু ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে।
Published : 12 Feb 2024, 05:44 PM
বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে দুইটি ট্রলারসহ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব, যারা সাগরে দস্যুতা করে বেড়াতেন বলে বাহিনীটির দাবি।
সোমবার নগরীর পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাটে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, গতবছর কক্সবাজারে সাগরে জলদস্যুদের খুন করে ট্রলারে ভাসিয়ে দেয়ার ঘটনার পর তারা সাগরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ান।
সেই ধারাবাহিকতায় টানা ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সোমবার ভোর রাতে দুই ট্রলারের ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মাহবুবের ভাষ্য, দুইটি ট্রলার নিয়ে তারা সাগরে ‘গণডাকাতি’ করতে যাচ্ছিলেন। ট্রলার দুইটি থেকে বেশকিছু ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- করিম (৩৩), রুবেল (৩৩), জফুর (৩৫), শফি আলম (৪০), আব্দুর রহিম (২৫), শামীম (২১), ইউসুফ (২৯), শাজাহান (৩৭), সাহাব উদ্দিন (৩৫), শওকত (৩৭), ইসমাইল (২৬), দেলোয়ার ইসলাম (৪২), নুর মোহাম্মদ (১৭), আব্দুর রহিম সিকদার (৩৪), মফিজুর রহমান (৩০), ফজল হক (৪০), গিয়াস উদ্দিন (২৬), কাছেদ (১৯), আকিদ খান (৩৭), দিদারুল ইসলাম (৩৩), নাইম (১৯), হারুন (৪৪), ইয়াছিন (২৯), খলিলুর রহমান (২৫), ইকবাল হোসেন (২৪), শাহেদ (২২), মোহাম্মদ হোসেন (২৪), আলী হোসেন (২৪), আব্দুল মান্নান (৪০) ও সোলায়মান (৩৮)।
তাদের মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে পুরনো মামলা ছিল। আটক করা ট্রলার দুইটির মালিক ইউসুফ ও করিম।
র্যাব-৭ অধিনায়ক মাহবুব আলম বলেন, গ্রেপ্তাররা ট্রলার নিয়ে ১০-১৫ দিনের জন্য সাগরে যায়। টানা ডাকাতি করে ফিরে আসে। পরে লুট করা জাল, মাছ বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে।
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার ৩০ জনের মধ্যে করিম, ইউসুফ ও সাহেদ অন্যতম। তারা বিভিন্নভাবে ডাকাতিতে ভূমিকা রাখে। সাহেদ কুতুবদিয়ার বাসিন্দা। তার মূল কাজ ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ট্রলার, লোকজন ও অস্ত্র সংগ্রহ করা। আর ইউসুফ সরাসরি ডাকাতিতে অংশ নিয়ে পরিকল্পনা করেন।
“ডাকাতির পর লুণ্ঠিত মালামাল করিমের কাছে দেয়া হত। করিম সেসব মালামাল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করতেন।”
র্যাব-৭ অধিনায়ক মাহবুব বলেন, এ ডাকাত দলটির মূল লক্ষ্য থাকে মাছ রার নৌকাগুলো।
“তারা সাধারণ জেলেদের মত মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সাগরে যায়। বিভিন্ন মাছ ধরার ট্রলার টার্গেট করে জেলেদের জিম্মি ও মারধর করে মাছ, জাল লুট করে নিয়ে আসে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে ডাকাতি করতে পারলে লুট করা মাছ নিয়ে ভোলা-বরিশালের দিকে নিয়ে বিক্রি করে। আর ভোলা, বরিশাল এলাকায় ডাকাতি করলে সেখান থেকে মাছ, জাল চট্টগ্রামের দিকে এনে বিক্রি করে।”
র্যাব-৭ অধিনায়ক মাহবুব বলেন, ডাকাতি করে ফেরার পর মাছ বিক্রির ৪০ শতাংশ টাকা তাদের কথিত ‘গডফাদারদের’ দিয়ে দিতে হয় বলে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছেন।
২০ শতাংশ টাকা ট্রলারের তেল খরচ রেখে বাকী ৪০ শতাংশ টাকা নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নেয় ডাকাত দলের সদস্যরা।
র্যাবের ভাষ্য, ভাগ-বাটোয়ারার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যার যার কাছে পৌঁছে দেয়া হত।