কাটার জন্য আনা জাহাজের লোহা চুরি, গ্রেপ্তার ৯

পুলিশ বলছে, চোরাই স্ক্র্যাপ কেনার একটি চক্র আছে চট্টগ্রামে। তাদের সঙ্গে জাহাজের মাস্টার-সুকানিদের যোগসাজশ আছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2022, 04:49 PM
Updated : 22 Sept 2022, 04:49 PM

স্টিল মিলের কাঁচামাল হিসেবে বিদেশ থেকে আনা স্ক্র্যাপ লাইটারেজ জাহাজ থেকে সরিয়ে ফেলা হয় মাস্টার-সুকানিসহ অন্যান্য নাবিকদের সহায়তায়; বিনিময়ে তারা নেন অগ্রিম টাকা।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত চট্টগ্রামের তিন ব্যক্তির খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন নৌপুলিশের সদরঘাট থানার ওসি এবিএম মিজানুর রহমান। তারা হলেন- মো.ইদ্রিস, মো. সাজ্জাদ ও আবু তাহের ওরফে আকাশ।

এদিকে বুধবার গভীর রাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ডায়মন্ড ঘাট এলাকায় নোঙর করা একটি লাইটারেজ থেকে আমদানি করা স্ক্র্যাপ সরিয়ে ফেলার সময় জাহাজের সাত নাবিকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নৌপুলিশ।

তারা হলেন, মাস্টার জসীম উদ্দিন (৪০), সুকানি মোক্তার হেসেন (৩৭), নাজমুল হাসান (২৪), মো.রাজীব খলিফা (২৫), গ্রিজার মো.করিম উদ্দিন (২২), লস্কর আব্দুর রহিম (৩০) ও মো. জাহিদ (২১), মো.কালাম (৩৮) ও মো. আব্দুল (২৪)। তারা এই চক্রের সদস্য বলে ‍পুলিশের ভাষ্য।

পুলিশ বলছে, এই চক্র বিভিন্ন লাইটারেজ জাহাজের মাস্টারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। আর মাস্টারদের আগাম টাকা দিয়ে রাখেন জাহাজ থেকে স্ক্র্যাপ সরিয়ে তাদের কাছে পাচারের জন্য। যেগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করা হয় খোলাবাজারে।

গত তিন মাসে দুটি লাইটারেজ জাহাজ থেকে স্ক্র্যাপ পাচারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া মাস্টার, সুকানি ও নাবিকদের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান ওসি মিজানুর।

গ্রেপ্তার ৯ জনের সঙ্গে ইদ্রিস, সাজ্জাদ ও তাহেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।

তবে ইদ্রিস, সাজ্জাদ ও তাহের পলাতক বলে জানান ওসি মিজানুর।

ওসি মিজানুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গভীর রাতে নদীতে টহল দেওয়ার সময় নৌপুলিশের একটি দল জাহাজ থেকে আমদানি করা স্ক্র্যাপ চুরির সংবাদ পায়। এসময় নদীর ডায়মন্ড সিমেন্ট ঘাট এলাকায় নোঙর করা ‘এমভি টিটু- ০৭’ নামে একটি জাহাজ থেকে এসব স্ক্র্যাপ সরানোর বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে অভিযান চালানো হয়।

এ সময় জাহাজের মাস্টার, সুকানিসহ জাহাজের সাতজন ও চক্রের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, রাতে জাহাজের হ্যাজের তালা কেটে বস্তায় ভরে স্ক্র্যাপগুলো ডেকে রাখা হয়। সেগুলো নৌকায় করে পাচারের উদ্দেশে রাখা ছিল। তার আগেই খবর পেয়ে পুলিশ তা জব্দ করে।

“এর আগে গত ১০ জুন রাতে ‘এমভি টিটু ১৬’ নামে একটি জাহাজ থেকে স্ক্র্যাপ পাচারকালে ছয় নাবিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।”

ওসি ‍মিজানুর জানান, দুটি জাহাজই আবুল খায়ের গ্রুপ মালিকাধীন। প্রতিষ্ঠানটি বিদেশ থেকে স্ক্র্যাপ আমদানি করেছে তাদের স্টিল মিলের জন্য।

চুরির জন্য দেওয়া হয় অগ্রিম টাকা

ওসি মিজানুর বলেন, চোরাই স্ক্র্যাপ কেনার একটি চক্র আছে চট্টগ্রামে। তাদের সঙ্গে জাহাজের মাস্টার-সুকানিদের যোগসাজশ আছে। তারাই জাহাজে থাকা স্ক্র্যাপের বিষয়ে সংবাদ জানায়। এরপর ক্রেতাদের লোকজন গিয়ে জাহাজ থেকে স্ত্র্যাপগুলো নিয়ে আসে।

“এজন্য জাহাজের মাস্টারদের অগ্রিম টাকা দেওয়ার তথ্যও পেয়েছে পুলিশ।

“ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার উদ্ধার করা স্ক্র্যাপগুলো সড়িয়ে নিতে ইদ্রিস, সাজ্জাদ ও আবু তাহের অর্থায়ন করেছে। এর আগেও তারা একইভাবে অর্থায়ন করেছিল বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।”