আইনের ব্যত্যয় ঘটায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বললেন, তারা আরও খোঁজ-খবর নেবেন।
Published : 26 Jul 2023, 08:01 PM
সরকারি চাকরিতে থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদ নিয়েছেন এরাদুল হক নিজামী ভুট্টো। এটা চাকরি বিধির লঙ্ঘন হলেও তিনি দাবি করছেন, আইনগত সমস্যা নেই।
চট্টগ্রাম নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সম্মেলন।
সম্মেলনে এরাদুলকে সভাপতি এবং মো. নাছির উদ্দিন রিয়াজকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু।
কমিটি ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার নেতাদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুও উপস্থিত ছিলেন।
এরাদুল চট্টগ্রাম সদর রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। এটি চতুর্থ শ্রেণির একটি পদ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই পদে চাকরি করছেন। এ পদে থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের মীরসরাই উপজেলা কমিটির সভাপতিও ছিলেন। এবার তাকে উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়কও করা হয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একজন সরকারি কর্মচারীকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া সংগঠনের গঠনতন্ত্রেরও বিরোধী। এছাড়া সরকারি চাকরি বিধিমালারও ব্যতয় হয়েছে।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৫ এ বলা আছে- “কোন সরকারি কর্মচারী কোন রাজনৈতিক দলের বা কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে বা কোনভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোন প্রকারেই সহযোগিতা করতে পারবেন না।”
সরকারি চাকরি করে রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠনের পদ নেওয়া নিয়ে প্রশ্নে এরাদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে থেকে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব পালনে ‘কোন বাধা নেই’।
তিনি চট্টগ্রাম বন্দর-রেলওয়েসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “সেখানে যারা চাকরি করেন, তাদের তো সিবিএ বা অন্য রাজনৈতিক শ্রমিক সংগঠনে যুক্ত হতে কোনো বাধা নেই। তেমনি আমারও দায়িত্ব নিতে সমস্যা দেখছি না।”
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা মূল পদে দায়িত্ব পালন করবেন, তারা সরকারি চাকরিতে থাকতে পারবেন না।”
সম্মেলনে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাদের ‘কনসার্নে’ কমিটির শীর্ষ পদের দুজনের নাম ঘোষণা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এরাদুলের সরকারি চাকরিতে থেকে দায়িত্ব পালন বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আরও খোঁজ নেবেন।
মঙ্গলবারে অনুষ্ঠিত উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।