দুদক কর্মকর্তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান এবং চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশের সঙ্গে কথা বলেন।
Published : 12 Feb 2025, 08:35 PM
দুটি প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যালয় থেকে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুপুরে নগরীর কোতোয়ালী মোড়ে সিডিএ ভবনে যায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর একটি দল।
নগরীর পতেঙ্গা থেকে সাগরিক পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প এবং নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বিষয়ে দুদকের প্রতিনিধি দল তথ্য জানতে চায় সিডিএর প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে।
এসময় দুদক কর্মকর্তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান এবং চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশের সঙ্গে কথা বলেন।
অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুদকের কর্মকর্তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের যে ক্র্যাক দেখা গিয়েছিল বিগত সরকারের আমলে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখেছেন।”
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং প্রকল্পের পরিচালক কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পে দায়িত্বপালনকারী সিডিএ কর্মকর্তাদের ভাতা গ্রহণ বিষয়ে দুদকের কর্মকর্তারা জানতে চেয়েছেন।
“ভাতার বিষয়টি প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতেই (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) ছিল। এই সংক্রান্ত অনুমোদিত নথিপত্র দুদককে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে কিছু উপযুক্ত অভিজ্ঞ লোক নিয়োগের কথা ছিল। বিজ্ঞাপন দিয়ে সব পদে লোক না পাওয়ায় সিডিএর সংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই প্রকল্পে কাজ করেছিলেন। এতে প্রকল্পের অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।”
এ সংক্রান্ত নথিপত্রও দুদকের অভিযান দলকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অভিযানের বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাতের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হওয়ার সময় ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। পরে ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’করে আরও এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা (আগের ব্যয়ের চেয়ে ৩২ শতাংশ) ব্যয় বাড়ানো হয়।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি গঠিত উপকমিটির সদস্যরা পরিদর্শনে এসে প্রকল্পের কাছে 'কিছু অসঙ্গতি' পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড নির্মাণে ২০১১ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্টের সঙ্গে চুক্তি সই করে সিডিএ। তখন প্রকল্প শেষের সময় ধরা হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ৮৫৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা
পরে ২০১৩ সালের অগাস্টে একনেকে অনুমোদনের পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ওই বছরের জুলাইতে শুরু হয় নির্মাণ কাজ।
এরপর গত এক যুগে চার দফায় ডিপিপি সংশোধন করে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ২৬৮০ কোটি এবং ৬৪৩ কোটি টাকা দিচ্ছে।
চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে 'কিছু অসঙ্গতি' পেয়েছে তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৫টি র্যাম্প আপাতত 'না'
অবশেষে খুলছে চট্টগ্রামের সেই ফিডার রোড
চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড: খরচ আর মেয়াদ বাড়ে, কাজ শেষ হয় না