সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনাও দেন সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোতালেব।
Published : 14 Jan 2024, 04:01 PM
সাবেক সংসদ সদস্য নেজামুদ্দীন নদভীর ‘দুর্নীতির’ শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে চান চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে জয়ী এম এ মোতালেব।
রোববার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের কর্মপরিকল্পনার পাশাপাশি সদ্য সাবেক সংসদ সদস্যের দুর্নীতির বিবরণ তুলে ধরার কথা জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব বলেন, “সাবেক সংসদ সদস্য নেজামুদ্দীন নদভী দুই দফায় ১০ বছর সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে অনেককেই অত্যাচার ও জুলুম করেছেন। নির্যাতিতদের আমি কথা দিয়েছিলাম আইনি সহায়তা করার, যাতে তারা মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্ত হতে পারে।”
মোতালেব আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে নদভী ও তার স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচার’ করছে। বিভিন্ন ধরনের উস্কানি দিয়ে প্রশাসনকে বিব্রত করার অপচেষ্টা করছে।
“সাতকানিয়ায় নির্বাচন পরবর্তী যা কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সেগুলো ‘ব্যক্তিগত বিরোধের’ ফলে হচ্ছে। এসব ঝামেলা থেকে বাঁচতে তারা সেসব ঝামেলাগুলোতে নির্বাচনি প্রলেপ দিচ্ছেন।”
সাতকানিয়া এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সময়ে শান্তিপূর্ণ, সহাবস্থান নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিজেদের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক বিরোধ যদি কেউ নির্বাচনের আড়ালে মেটানোর চেষ্টা করে, সে দায় তিনি নেবেন না।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী। আগে দুইবার তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন।
অতীতে এ আসনটি পরিচিত ছিল জামায়াত ইসলামীর দুর্গ হিসেবে। প্রতিবারেই এ আসন থেকে জয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করত জামায়াত ইসলামী। ২০১৪ সাল থেকে এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় জামায়াত ত্যাগী নদভীকে। পরপর দুইবার এ আসন থেকে নদভী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি তাকে।
এ আসনে মনোনয়ন পেতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে এমপি মনোনয়ন চান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব। তবে কেন্দ্র তাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তিনি হন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
নির্বাচনে মোতালেব ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর নৌকা প্রতীকে নেজামুদ্দীন নদভী পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট।
মোতালেবের অভিযোগ, সংসদ থাকাকালীন নদভীর পরিবারের সদস্যরা সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা, এওচিয়া, সোনাকানিয়া, নলুয়া ও চরতি ইউনিয়নের বালুর মহাল, ইটভাটা দখল ও চাঁদাবাজির মত ঘটনা ঘটিয়েছে।
এছাড়াও টপ সয়েল বিক্রি, কৃষককে গুলি করা, বন উজাড় করার মত ঘটনাও ঘটিয়েছে নদভীর পরিবারের সদস্যরা।
নদভী ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোতালেব।
সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনাও দেন সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোতালেব।
কয়েকটি রাস্তার কাজ শুরু, কিছু রাস্তার নির্মাণ কাজের গতি বাড়ানো এবং কিছু রাস্তার কাজ দ্রুত সময়ে শেষ করার আশ্বাস দেন।
সংবাদ সম্মেলেনে বক্তব্য রাখেন মোতালেবের প্রধান নির্বাচনি সমন্বয়ক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক ফোরামের নেতা আ ম ম মিনহাজুর রহমান, সদস্য সচিব ও সাতকানিয়ার পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুদ্দীন সিদ্দিকী, প্রদীপ কুমার চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ লিটন, সাতকানিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল গফুর লালুসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।