মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদনটি জমা দেয় পুলিশের এই তদন্ত সংস্থা।
মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মূলত এটা এই মামলায় তদন্ত সমাপ্ত করার প্রতিবেদন।
“সেইসঙ্গে এই মামলায় থাকা আসামি, সাক্ষীর জবানবন্দিসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র এই ঘটনায় বাবুল আক্তারের করা মামলাটিতে যুক্ত করার একটি আবেদনও করা হয়েছে।
প্রতিবেদন জমা হলেও এ বিষয়ে আদালত কোনো আদেশ বা শুনানির তারিখ ধার্য করেনি বলে জানান তিনি।
মিতুর বাবার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আদালতেই বিষয়টির মীমাংসা হবে বলে জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কোনো প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে কি না তা আদালতের মাধ্যমে জানতে পারব। এছাড়া একটি মামলার নথিপত্র, সাক্ষী কী অন্য মামলায় সংযুক্ত করার বিধান আছে?
“নিশ্চয় আদালত এ বিষয়ে শুনানির তারিখ দেবেন। তখন দেখা যাবে।”
মামলার বাদী মাহমুদা আক্তার মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবুলসহ এই ঘটনায় যারা সম্পৃক্ত আমরা তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।
“একই ঘটনায় তো দুটি মামলা চলতে পারে না। তাই হয়ত একটা ড্রপ করতে হবে। আমার করা মামলার প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি ডায়েরি, দুটি বই ও কাগজপত্র দিয়েছিলাম।
“এই মামলার আসামি মুসার স্ত্রীসহ কয়েকজন সাক্ষ্য দিয়েছিল। একজন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিল। আমি, আমার স্ত্রী এবং মেয়েও সাক্ষী দিই। সেসব যেন আগের মামলায় সংযুক্ত করা হয়।”
মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে যে মামলাটি করেছিলেন, পিবিআই’র করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সে মামলাতেই বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখাতে গত ৯ জানুয়ারি আদেশ দেয় আদালত।
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে ওই মামলায় জামিন আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারক তা নামঞ্জুর করেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
৯ জানুয়ারির আগে পর্যন্ত মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার ছিলেন বাবুল আক্তার।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন তখনকার পুলিশ সুপার বাবুল। তার ঠিক আগেই চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে ছিলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবুল আক্তার নিজেই। ওই মামলার তদন্তে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে গত বছর মে মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় তদন্ত সংস্থা পিবিআই।
এর ভিত্তিতেই বাবুল আক্তারকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
আরও পড়ুন