ঈদের ছুটিতে ‘স্বর্ণালঙ্কার’ চুরি, দুই বছর পর গ্রেপ্তার ৫

দুই বছর আগে ঈদের ছুটিতে বন্দর নগরীর এক আইনজীবীর বাসায় ‘স্বর্ণালঙ্কার’ চুরির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2021, 05:58 PM
Updated : 7 June 2021, 05:58 PM

এরা হলেন- শাহজাহান (৩৮), মাসুদ (৩৫), সুমন কর্মকার (৩৮), শওকত হাওলাদার (২২) ও দোলোয়ার হোসেন (৫৫)।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ জানান, রোববার রাত পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম ও লালমোহন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এদের মধ্যে শাহজাহান ও তার সহযোগী মাসুদ চুরিতে সরাসরি অংশ নেয়। বাকি তিনজন স্বর্ণালঙ্কার কেনা-বেচায় জড়িত।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা রউফ জানান, ২০১৯ সালের ১৩ অগাস্ট কোতোয়ালি থানায় একটি চুরির মামলা করেছিলেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী জাফরুল আলম। ওই মামলার নতুন তদন্তে তাদের শনাক্ত করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, কোরবানি ঈদের ছুটিতে আসাদগঞ্জের বাসা থেকে তিনি গ্রামের বাড়ি গেলে ১০ থেকে ১২ অগাস্টের মধ্যে গ্রিল কেটে তার ঘর থেকে নগদ টাকা, প্রাইজবন্ড ও ১৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি করা হয়।

মামলাটির তদন্তে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে সেখানে বেশকিছু শ্রমিককে দেখা গেলেও ঘরে প্রবেশ কিংবা বের হওয়ার কোনো দৃশ্য পাওয়া যায়নি।

এর কোন রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। কিন্তু ওই আইনজীবী এতে ‘নারাজি’ দিলে মামলাটি নগর গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের ভার দেয় আদালত।

আব্দুর রউফ বলেন, “গোয়েন্দা পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে সেখানে কাজ করা দুই শ্রমিককে আর ওই এলাকায় না পেয়ে খোঁজ শুরু করে। পরে ‘চুরিতে অংশ নেওয়া’ শাহজাহানের অবস্থান নির্ণয় হয়।

“আগে সে আসাদগঞ্জে ভ্যান গাড়িতে করে টিন আনা নেওয়ার কাজ করলেও পরে নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে মাছ কাটার কাজ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান জানায়, সে ও তার সহযোগী মাসুদ মিলে ওই সময় ১৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি করেছিল। তার কিছু চট্টগ্রামে বিক্রি করে এবং বাকিগুলো নিয়ে তারা ভোলায় গিয়ে আত্মগোপন করে।”

শাহজাহান জানায়, চুরির পর সে ও তার সহযোগী মাসুদ ফিরিঙ্গীবাজারে দেলোয়ারের কাছে গিয়ে কিছু স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে ১৮ হাজার টাকা নেয়। পরে ভোলার লালমোহনে মাসুদের বাড়িতে চলে যায়।

লালমোহনে কিছুদিন অবস্থান করে বাকি অলঙ্কারগুলো তারা ভাগাভাগি করে নেয়। কিছু অলঙ্কার শাহজাহান বিক্রি করে একটি খাট কিনে সেখানে মাস খানেক থেকে চট্টগ্রামে ফিরে বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে মাছ কাটার কাজ শুরু করে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, শাহজাহান জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে না পারলেও ভোলার লালমোহনে তার বাড়ি বলে নিশ্চিত করে।পরে তাকে নিয়ে লালমোহন থেকে মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, “মাসুদ তার ভাগের কিছু অলঙ্কারের মধ্যে তিন জোড়া কানের দুল ও একটি আংটি ভাগ্নিকে উপহার দেয়। বাকিগুলো সে বিক্রি করে দিয়েছে।”

তবে ভাগ্নিকে দেওয়া অলঙ্কারগুলো উদ্ধার করা হয়েছে এবং চোরাই অলঙ্কার কেনার দায়ে দেলোয়ার, সুমন ও শওকতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার শাহজাহান চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।