বাবুনগরীদের কমিটি ‘অবৈধ’, দাবি শফীর অনুসারীদের

হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের কাউন্সিল শেষে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা ‘অবৈধ’ বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2020, 12:52 PM
Updated : 15 Nov 2020, 12:52 PM

তবে এখনই পাল্টা কোনো কমিটির দিকে তারা যাচ্ছেন না। তারা বলেছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আহমদ শফীর ‍মৃত্যুর পর হেফাজতের আমির পদটি শূন্য হয়। সেজন্য রোববার হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় সম্মেলন ডাকা হলেও তাতে আমন্ত্রণ পাননি শফী সমর্থকদের অনেকে।

কাউন্সিল শেষে নতুন কমিটিতে আমির হিসেবে জুনাইদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব হিসেবে নূর হোসেইন কাসেমীর নাম ঘোষণা করা হয়।

আহমদ শফী যখন আমির ছিলেন, তখন তার ছাত্র জুনাইদ বাবুনগরী ছিলেন মহাসচিব আর ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নূর হোসাইন কাসেমী ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির।

সেই কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহী এবং আহমদ শফীর ছেলে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানি রোববার ঘোষিত কমিটিতে কোনো পদ পাননি।

এই বছরের মাঝামাঝিতে শফীর ছেলে আনাস মাদানির সঙ্গে দ্বন্দ্বে মাদ্রাসার পদ হারান বাবুনগরী, তবে হেফাজতের মহাসচিবের পদে থেকে যান।

ওই ঘটনার জের ধরে এক দল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বিক্ষোভের মুখে মাদ্রাসার মহাপরিচালকে পদ ছাড়েন আহমদ শফী; তার ছেলে আনাস মাদানিকেও বরখাস্ত করা হয়। এরপর বাবুনগরী আবার মাদ্রাসার পদে ফেরেন।

হাটহাজারী মাদ্রাসার কর্তৃত্ব হারানোর পরদিনই আহমদ শফী মারা যান। এরফলে আমিরের শূন্যপদ পূরণে বাবুনগরীরা সক্রিয় হয়ে ওঠার পর থেকে তার বিরোধিতা করছেন শফীর ‍অনুসারীরা।

রোববারের সম্মেলনে জুনাইদ বাবুনগরীসহ হেফাজত নেতারা

রোববার নতুন কমিঠি ঘোষণার পর মঈনুদ্দীন রুহী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই কমিটি অবৈধ। আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করি।

“এই কাউন্সিলের যিনি আহ্বায়ক, সেই মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর হেফাজতে ইসলামে সদস্য পদও নেই। এরকম একজন ব্যক্তি কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করতে পারেন না।”

 মঈনুদ্দীন রুহীর দাবি, রোববার হাটহাজারী মাদ্রাসায় হওয়া কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে থাকা ৬৫ জনই উপস্থিত ছিলেন না।

তিনি বলেন, “আমি এখন ঢাকায় আছি। সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠকে বসেছি। যেহেতু গঠনতান্ত্রিকভাবে কাউন্সিল বা সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই এর সবই অবৈধ।”

নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব। সময়ই বলবে আমরা কী করব। সেই সিদ্ধান্ত আপনাদের জানাব।”

শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে রুহী দাবি করেছিলেন, আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর ‍মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, আর তা ছিল ‘জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র’।

শফীর শ্যালক হেফাজত নেতা মঈন উদ্দিনও সেই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।

মঈন উদ্দিন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একতরফাভাবে তারা কাউন্সিল করেছে।

“আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছাত্র, গুণগ্রাহী এবং অনুসারীরা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তাদের সাথে আলোচনা করে যা করা দরকার সেটা করা হবে।”

এসব বিষয়ে জানতে আহমদ শফীর ছোট ছেলে হেফাজত নেতা আনাস মাদানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আনাস মাদানির মামা মঈন উদ্দিন বলেন, “সে শারীরিকভাবে অসুস্থ।”