বড় এ দুই প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি রোববার বন্দরনগরীর পতেঙ্গা রিং রোড এলাকায় একটি সুধী সমাবেশেও অংশ নেবেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে বলেছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় গত দশ বছরে চট্টগ্রাম শহর বদলে গেছে।
“প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল আরও কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রামের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও মমত্ব, এটা তার বহিঃপ্রকাশ।”
কর্ণফুলীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ হবে বাংলাদেশে সড়ক যোগাযোগের প্রথম টানেল। চট্টগ্রাম শহররে বন্দর এলাকার সঙ্গে নদীর অন্য তীরের আনোয়ারা উপজেলা এই টানেলের মাধ্যমে সড়কপথে যুক্ত হবে।
সরকার বলছে, বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাইয়ের আদালে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তোলা হবে কর্ণফুলীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
তিন দশমিক চার কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেইনের এ টানেল হবে দুই টিউব সম্বলিত। পশ্চিম প্রান্তে ৭৪০ মিটার এবং পূর্বে চার হাজার ৯৫২ মিটার অ্যাপ্রোচ রোড থাকবে।
টানেলটি নির্মাণ করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন্স কন্সট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি)। প্রকল্পের ৩২ শতাংশ কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। রোববার শুরু হবে টানেলের জন্য মূল খনন কাজ।
টানেল বোরিং মেশিন পতেঙ্গা অংশ থেকে মাটি কেটে কেটে নদীর ১৮-৩১ মিটার গভীর দিয়ে এগিয়ে যাবে অন্য প্রান্তের দিকে। পাশাপাশি যন্ত্রের সাহায্যে কংক্রিট সেগমেন্ট যুক্ত হয়ে গড়ে তুলবে টানেলের কাঠামো। এরকম দুই হাজার সেগমেন্ট ইতোমধ্যে চীন থেকে নিয়ে আসা হয়েছে প্রকল্প এলাকায়।
টানেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক।
বাকি ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বোরিং কাজের উদ্বোধন করবেন। সেজন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।”
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে ম্যাক্স-রেঙ্কিন জেভি।
লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নয়টি পয়েন্টে ২৪টি র্যাম্প থাকবে।
এ প্রকল্পের পরিচালক সিডিএর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রকল্পের সিমেন্ট ক্রসিং-পতেঙ্গা এবং লালখান বাজার-টাইগার পাস অংশে কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বারিক বিল্ডিং-কাস্টমস অংশের মাটি পরীক্ষা শেষ হয়েছে।
“কাল নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। চার বছরের মধ্যে এ কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।”