মহিউদ্দিনকে নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ

দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার মধ্য দিয়ে একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2018, 04:53 PM
Updated : 6 Dec 2018, 04:53 PM

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আয়োজনে ‘সাংবাদিকবান্ধব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী স্মারকগ্রন্থ’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। প্রধান আলোচক ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, মৃত্যুর পর মানুষ স্মৃতির অন্তরালে চলে যান। কিন্তু কেউ কেউ তার কাজের মধ্য দিয়ে থেকে যান মানুষের মনিকোঠায়। বাঙালি যেমন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মনে রেখেছে, তেমনি চট্টগ্রামবাসী তাদের প্রিয় মহিউদ্দিনকে আজীবন মনে রাখবে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের এমন আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল না যেখানে তিনি ছুটে যান নি। যেখানেই সংকট সেখানেই তিনি ছুটে গেছেন। এ কারণে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।

ড. অনুপম সেন তার বক্তব্যে বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী কত বড় মাপের নেতা ছিলেন তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, ভবিষ্যতেও অনেক হবে। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিবাদ করেছিলেন। তাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে আবার ফিরে আসেন। যারা প্রতিবাদ করেছিলেন সেই গুটিকয়েক ব্যক্তির মধ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরী একজন।

“মহিউদ্দিন মানুষের জন্য ভালোবেসে কাজ করেছেন। তরুণদের জানতে হবে মহিউদ্দিন চৌধুরী কী কী করে গেছেন। তিনি কারো কাছে মাথা নোয়াননি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা ছাড়া।”

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, “তিনি (মহিউদ্দিন) মানুষের কল্যাণের জন্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং আমৃত্যু এর সাথে ছিলেন। চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের স্বার্থের প্রশ্নে কখনও আপস করেননি। অন্য রাজনীতিবিদদের থেকে ব্যতিক্রম তিনি।”

মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহীবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “আমার বাবা ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। তার এ জীবনকে মূল্যায়ন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

“‘কলম সৈনিকদের প্রতি বাবার অপার ভালোবাসা ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন তারা যদি মুক্ত-স্বাধীন থাকেন এবং সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারলে সমাজ-রাষ্ট্রের ভালো হবে। তিনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। অনেক সময় অভিমান করে বলতাম- আপনার বিরুদ্ধে লেখে, আপনি তাদের ভালোবাসেন কেন? তিনি বলতেন, সাংবাদিকরা স্বাধীন তারা প্রশংসা যেমন করবে, সমালোচনাও করবে।”

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধুরীর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী ও চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা লীগের সভানেত্রী বেগম হাসিনা মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোয়াজ্জেমুল হক, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু বক্তব্য রাখেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনবারের সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ১৯৬ পৃষ্ঠার স্মারকগ্রন্থটি প্রকাশ করে। এতে চট্টগ্রামের ৫৬ জন সাংবাদিকের লেখা সংকলিত হয়েছে।   

গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। এ গ্রন্থে মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবনের বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। এছাড়া এতে আছে আছে তার রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বর্ণনা ও ছবি।