নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বায়েজিদ বোস্তামি জোন) সোহেল রানা জানান, আত্মীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে রোববার দুপুরে খুশলী থানার আমাবাগান এলাকায় মেহের মঞ্জিল নামের ওই ভবন থেকে তারা লাশ দুটি উদ্ধার করেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মেহেরুন্নেসা বেগম (৬৭) রূপালী ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার। ৯৪ বছর বয়সী মা মনোয়ারা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মালিকানাধীন ওই বাড়িতে থাকতেন তিনি।
মেহেরুন্নেসার ভাগ্নের সন্দেহ, এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য। আর পুলিশ বলেছে, সব সম্ভাবনাই তারা খতিয়ে দেখছে।
চার তলা ভবনটির নিচতলায় মেহেরুন্নেসারা থাকতেন। বাকি তিন তলার কাজ পড়ে আছে অসমাপ্ত অবস্থায়।
“সকালে একজন আত্মীয় এসে বাসায় তাদের না পেয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে রিজার্ভ ট্যাংকে লাশ দেখতে পায়।”
পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে রিজার্ভ ট্যাংক থেকে লাশ তোলেন। পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট ওই বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ করে।
আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেহেরুন্নেসাদের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে। ২০০০ সালে তিনি আমাবাগান এলাকায় ওই জমি কিনে বাড়ি বানানো শুরু করেন। নিচতলার কাজ শেষে ২০০৬ সালে তারা ওই ভবনে উঠে এলেও বাকি তিন তলার কাজ দীর্ঘদিন ধরে অসমাপ্ত পড়ে থাকে।
এই পরিবারের চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে বড় দুই ভাই মারা গেছেন। এক ভাই ঢাকায় এবং অন্য ভাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।
মেজ বোনের ছেলে বেলালউদ্দিন ওই বাড়ির বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, তার মামা সকালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেহেরুন্নেসাদের বাসায় ফোন করে কাওকে না পাওয়ায় তাকে ফোন করেন।
এরপর বেলাল এক প্রতিবেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো তথ্য না পেয়ে আমবাগানে চলে আসেন। বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে তিনি দেখেন, ভেতরের দরজা খোলা, জিনিসপত্র এলোমেলো, আলমারিও ভাঙা। কিন্তু অন্য কেউ ঘরে নেই।
এই পরিস্থিতিতে বেলাল থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। তল্লাশির এক পর্যায়ে ঘরের ভেতরে রক্তমাখা কাপড় পাওয়া যায়। পরে রিজার্ভ ট্যাংকে পাওয়া যায় দুই বৃদ্ধার লাশ।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তার খালা শেষ দিকে এসে ওই বাড়ি ও জমি বিক্রি করে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। সেজন্য তিনি গোপনে ক্রেতাও খুঁজছিলেন।
“তার ভয় ছিল, এ পরিকল্পনা প্রকাশ পেলে স্থানীয়দের মধ্যে কেউ তাকে বাধা দেবে। তবে সেই লোক কে, তা তিনি আমাকে বলেননি। আমার মনে হচ্ছে, সম্পত্তি আত্মসাৎ করতেই খালা আর নানীকে এভাবে খুন করা হয়েছে।”