জঙ্গল সলিমপুরে হত্যা-ধর্ষণের আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছে, যার বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে থানায়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2018, 03:49 AM
Updated : 12 March 2018, 03:59 AM

র‌্যাব-৭ এর উপ পরিচালক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর রহমান বলছেন,  সোমবার ভোর রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।  

নিহত কালুর বয়স আনুমানিক ৪২ বছর। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১২টি মামলা রয়েছে বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

র‌্যাব কর্মকর্তা আশেকুর রহমান বলেন, তাদের একটি দল গভীর রাতে জঙ্গল সলিমপুরে টহলে গেলে সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

“আত্মরক্ষার জন্য র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। দুইপক্ষের গোলাগুলির পর একজনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারিম তার নাম কালু।”

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ গুলি এবং ১৩টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর।

জঙ্গল সলিমপুরের কয়েকশ একর এলাকায় গত এক যুগ ধরে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার মানুষের অবৈধ বসতি। পুরো এলাকাকে ১১টি ‘সমাজে’ ভাগ করে ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ সেখানে গড়ে তুলেছে ‘দুর্ভেদ্য সাম্রাজ্য’।

ওই এলাকার ভেতরে রয়েছে ১২টি মসজিদ, চারটি মাদ্রাসা, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, তিনটি কেজি স্কুল, তিনটি এতিমখানা, ছয়টি কবরস্থান, পাঁচটি মন্দির, দুটি কেয়াং, একটি গির্জা, একটি শ্মশান এবং একটি কাঁচা বাজার।

সমিতিকে টাকা দিলে তবেই সেখানে বসবাসের অনুমতি মেলে। দুর্গম ওই এলাকায় প্রশাসনের খুব একটা প্রভাব না থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে বড় বড় সন্ত্রাসীরাও সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

পাহাড়ে ওই অবৈধ বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০০৪ সালে একাধিক পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ২০১০ সালে স্থানীয় লাল বাদশা ও আলী আক্কাসের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

২০১০ সালের ২৩ মে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হন আলী আক্কাস। পরে ছিন্নমূল বস্তিবাসী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে আসেন বর্তমান সভাপতি গাজী সাদেকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মশিউর।