সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগানোর পাশাপাশি শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে রেল চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বাতিল কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারীরা ক্যাম্পাসে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে মিছিল স্লোগান দিয়ে মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।
এসময় তারা শাটল ট্রেনের হোজ পাইপ কেটে দিলে দুপুর দেড়টা ও আড়াইটার ট্রেন ক্যাম্পাস ছেড়ে শহরে আসতে পারেনি।
এদিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর সড়ক অবরোধ করায় চট্টগ্রামের সঙ্গে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া ক্যাম্পাসে মামলার প্রধান আসামি ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, বাতিল কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুকেও দেখা গেছে বলে তারা জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে একদল ছাত্র ট্রেনের হোজ পাইপ কেটে দেওয়ায় শাটল ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। তারা প্রধান ফটকেও তালা দিয়েছে।
“আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।”
ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন তৈরি ও ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ শুরুর আগে সকালে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে দিয়াজ হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি আনোয়ার হোসেনের পক্ষে স্লোগান দিয়ে মিছিল করে আলমগীর টিপু ও তার অনুসারীরা।
উচ্চ অদালত থেকে নেওয়া ছয় সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিন শেষ হওয়ার পর সোমবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার।
আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই সহকারী প্রক্টরকে কারাগারে পাঠানোর সময় প্রিজন ভ্যানের সামনেও আলমগীর টিপুর নেতৃত্বে মিছিল করে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা, যারা সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হলেও দিয়াজের মা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী জাহেদা আমিন চৌধুরী তা প্রত্যাখ্যান করে আদালতে হত্যা মামলা করেন।
শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে দিয়াজকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ করা হয়েছে।
পরে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তে দিয়াজকে হত্যার আলামত দেখতে পান চিকিৎসকরাও।
দিয়াজের মায়ের করা মামলায় আলমগীর টিপুসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক ১০ নেতা-কর্মীর সঙ্গে তৎকালীন সহকারী প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকেও আসামি করা হয়।